নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের যে কারও মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, ‘ছাপান্ন ইঞ্চি’র ‘চা-ওয়ালা’র শিক্ষাগত যোগ্যতা(Educational Qualification) কী? সেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা মোটেও অপরাধ নয়। এমনকি নির্দিষ্ট ভাবে কোনও জায়গা থেকে সেই তথ্য চাওয়াও অপরাধ নয়। তাই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী(Delhi Chief Minister) তথা AAP সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালাও(Arvind Kejriwal) জানতে চেয়েছিলেন সেই তথ্য। তাই করেছিলেন তথ্যের অধিকার আইনে প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের জেরেই অস্বস্তি ছড়িয়েছিল গেরুয়া শিবিরে। তবে গেরুয়া শিবিরের পাশাপাশি দেশের প্রধানমন্ত্রীর মান বাঁচাতে কোনও তথ্য প্রকাশই করল না গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়(Gujrat University)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে রাজি নন তাঁরা। তথ্যের অধিকার আইনে গুজরাত হাইকোর্টে(Gujarat High Court) বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্রেফ কারোর ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শিশুসুলভ কৌতূহল’কে জনস্বার্থ বলে গণ্য করা যায় না। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর গোপনীয়তার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন শিশু যৌন নির্যাতনে দেশে শীর্ষস্থানে ৩ ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালে। ওই সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সচিত্র পরিচয় পত্র নিয়ে একটি আবেদন কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে এসেছিল। এবিষয়ে তাঁর জবাবে কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, তিনি সমস্ত তথ্য দিতে আগ্রহী। কিন্তু তিনি পাল্টা মোদির(Narendra Modi) শিক্ষাগত ডিগ্রির বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। কমিশন কেজরিওয়ালের জবাবকে RTI আবেদন হিসেবে বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে মোদির ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য কেজরিওয়ালকে দিতে বলেছিল কমিশন। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়। এই মামলায় আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সওয়াল করেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘এব্যাপারে লুকোনোর কিছু নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়কে তথ্য প্রকাশে বাধ্য করা যায় না। গণতন্ত্রে কোনও শীর্ষ পদাধিকারী ডক্টরেটই হোন বা নিরক্ষর, তাতে কোনও ফারাক পড়ে না। আর এক্ষেত্রে তো জনস্বার্থ বলে কোনও বস্তুই নেই। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর গোপনীয়তাকে প্রভাবিত করবে। বিশ্ববিদ্যালয় তো ইতিমধ্যেই মোদির ডিগ্রি জনসমক্ষে প্রকাশ করেছে।’
আরও পড়ুন মাত্র ২ দিনে বাংলায় খুলল সাড়ে ৭৭ হাজার সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট
তুষার মেহতার আরও বক্তব্য, ‘কারও কৌতূহল নিবৃত্তির জন্য RTI-কে ব্যবহার করা যায় না। এভাবে কোনও পড়ুয়ার ডিগ্রি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ RTI-য়ের ধারারও পরিপন্থী।’ শুনানির পর বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব পিটিশনে তাঁর রায় স্থগিত রেখেছেন। উল্লেখ্য, বিজেপি আগেই জানিয়েছে, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেন। তারপর ১৯৮৩ সালে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। যদিও আপ দাবি করেছিল, ওই ডিগ্রিগুলি ভুয়ো। সেই দাবি যে ভুয়ো সেটাও কিন্তু প্রমাণ হলনা । বরং সুকৌশলে সেই দাবিকে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হল।