নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে বিজেপির সঙ্গে ‘গোপন’ যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পদ্ম শিবিরের ‘বান্ধব’ হওয়ার কারণেই সাংসদ না হয়েও দু’বছরের বেশি দিল্লিতে সরকারি বাংলোতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন এমনকী রাজ্যসভায় তাঁর মেয়াদের শেষ দিনে ভাষণ দিতে গিয়ে তো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেঁদে চোখ থেকে অশ্রুধারা বইয়ে দিয়েছিলেন। যার ফলে রাজধানীর রাজনীতির অন্দের মহলে অনেকেই আড়ালে-আবডালে তাঁকে ঠাট্টা করে ডাকেন ‘মোদি গোলাম’ আজাদ বলে। শনিবার ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই ‘মোদির গোলাম’ হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন গুলাম নবি আজাদ। স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, ‘কংগ্রেসে কখনই ফিরবেন না’। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখও হয়েছেন। আর তার পরেই চর্চা শুরু হয়েছে, তাহলে কী সস্তার নাটক শেষে লোকসভা ভোটের আগেই বিজেপিতে যোগ দেবেন ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম সুবিধাবাদী চরিত্র?
এদিন ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসকে বিঁধতে গিয়ে মুসলিমদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন ভারতীয় রাজনীতিতে কট্টর সাম্প্রদায়িক রাজনেতা হিসেবে পরিচিত গুলাম নবি আজাদ। মুসলিম হওয়ার কারণেই তিনি কখনও কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি হতে পারেননি বলেও ছিঁচকাঁদুনি গেয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যে গান্ধি পরিবারের দয়াতে রাজনীতিতে ধূমকেতুর মতো উত্থান সেই পরিবারকেও তুলোধনা করেছেন আজাদ। মূলত রাহুল গান্ধিই ছিল তাঁর নিশানায়। স্বার্থে ঘা লাগায় পুরনো দলের অনেক গোপন তথ্যও ফাঁস করেছেন তিনি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ‘মুসলিম হওয়ার কারণে কংগ্রেস সভাপতি হতে না পারার’ কথা বলে কর্নাটক ভোটের আগে মুসলিমদের শতাব্দী প্রাচীন দলের বিরুদ্ধে উসকে দিতে চেয়েছেন আজাদ। যাতে সংখ্যালঘুরা কংগ্রেসকে নিজেদের শত্রু মনে করে বিজেপির দিকে ঝোঁকে। যদি সংখ্যালঘুরা কংগ্রেসের দিক থেক মুখ ফিরিয়ে নেয়, হলে দক্ষিণের রাজ্যটিতে হেসেখেলেই ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। ‘বান্ধব’ নরেন্দ্র মোদির দলকে টিটপু সুলতানের রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরাতেই সংখ্যালঘু তাস খেলে মুসলিমদসের আবেগে সুড়সুড়ি দিতে চেয়েছেন তিনি। যদিও দলত্যাগী প্রাক্তন নেতার মন্তব্যকে গুরুত্বই দিতে চাননি কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ।