নিজস্ব প্রতিনিধি, আমদাবাদ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Union Home Minister Amit Shah) খাসতালুক গুজরাতের (Gujrat) খাকি উর্দিধারীদের গুণ্ডামির আরও এক নজির সামনে এল। বিচার ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের হাতেই আইন তুলে নিয়েছে বিশাল বপুর পুলিশ কর্মীরা। মোদি-শাহের রাজ্যের খাকি উর্দিধারীদের গুণ্ডামির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (Social Media) ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রকাশ্যে এইভাবে পুলিশ কাউকে বেঁধে পেটাতে পারে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি গুজরাত পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড় গোল করে ঘিরে রেখেছে গুজরাত পুলিশের সাদা পোশাক পরা আধিকারিক ও কর্মীরা। পাশেই দাঁড়িয়ে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান। সেই ভ্যান থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে একের পর এক যুবককে। তার পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একটি ল্যাম্পপোস্টে। তার পরে লাঠিপেটা করছে। আর নীতি পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া খাকি উর্দিধারীদের এমন গুণ্ডামিকে হাততালি দিয়ে তারিফ করছেন গ্রামবাসীরা। গুজরাতের এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে অমানবিক দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তা খেড়া জেলার (Kheda District) উনদেলা (Undhela) গ্রামের। নবরাত্রি (Navratri) উপলক্ষে সোমবার রাতে ওই গ্রামের মন্দির চত্বরে আয়োজিত গারবা নাচের অনুষ্ঠানে মুসলিমরা আচমকা ঢুকে গোলমাল পাকিয়েছে বলে অভিযোগ করে বেশ কয়েকটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ৪৩ জন মুসলিম যুবকের নামে স্থানীয় মাতার থানায় (Matar Police Station) এফআইআরও দায়ের করা হয়। ওই এফআইআর দায়েরের সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় থানার পুলিশ অতি সক্রিয় হয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার সকালে ধৃতদের গ্রামের জনবহুল মোড়ে নিয়ে যায় মাতার থানার (Matar Police Station) আধিকারিকরা। তার পরে গাড়ি থেকে নামিয়ে লাঠিপেটা করতে থাকে। লাঠি দিয়ে বেধড়ক প্রহার করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রামবাসীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়। আদৌ অভিযুক্তরা গতকাল রাতে মন্দির চত্বরে গোলমাল পাকিয়েছে কিনা, তা প্রমাণের আগেই কীভাবে পুলিশ প্রকাশ্যে অমানবিক শাস্তি দিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে।