নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: না চাইলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি পাঠিয়ে ব্যবহারকারীদের তোপের মুখে পড়েছে মার্ক জুকারবার্গের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ। গত কয়েকদিন ধরে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারকারীরা আচমকাই তাদের হোয়াটসঅ্যাপে ‘বিকশিত ভারত সম্পর্ক’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে মোদির চিঠি পাচ্ছেন। না চাইতে কেন তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে মোদির প্রচার চিঠি পাঠানো হচ্ছে তা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশও ঠুকেছেন অনেকে। যদিও এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর পাননি তাঁরা। সোমবার ‘হোয়াটসঅ্যাপে’ জোরজবরদস্তি ব্যবহারকারীদের কাছে মোদির চিঠি পাঠানো নিয়ে সরব হয়েছেন শশী থারুর, মণীশ তিওয়ারিরা। আদর্শ আচরণ বিধি চালুর পরেও কেন এভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মোদির চিঠি পাঠানো হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। নির্বাচন কমিশনকেও ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার অনুরোধ জানিয়েছেন। সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জোর করে গ্রাহকদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং নীতি বিরুদ্ধ।
মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলিকে ফেক নিউজের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলিকে টেক্কা দিয়েছে বিজেপি। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি নেতৃত্ব দেশজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাই করতে। হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই ধর্মের বিষ আর মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। জাতীয়তাবাদে সুড়সুড়ি দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি বিরোধী নেতা-নেত্রীদের চরিত্রহনন করা হচ্ছে এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে আচমকাই ‘বিকশিত ভারত’-এর স্লোগান তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তাঁর ওই নয়া স্লোগানের পরে আচমকাই না চাইলেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছে অবাঞ্ছিতভাবে ঢুকে পড়ছে ‘বিকশিত ভারত সম্পর্ক’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট। আর ওই অ্যাকাউন্টে মোদির একটি চিঠিও রয়েছে। শুধু ভারত নয়, দেশের বাইরে থাকা ভিন দেশি বহু নাগরিকই হোয়াটসঅ্যাপে মোদির চিঠি পাচ্ছেন। বেশ কয়েকজন ভেবেছিলেন, ভারতে ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে ওই চিঠিতে। কিন্তু খুলে দেখতেই চোখ ছানাবড়া তাদের। কেননা ওই চিঠিতে ভারতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে জরুরি তথ্য নেই। আর তাতেই চটে লাল তাঁরা। কীভাবে তাদের ফোন নম্বর ‘বিকশিত ভারত সম্পর্ক’ অ্যাকাউন্টের মালিকের কাছে গেল, তা বুঝেই পাচ্ছেন না তারা।