নিজস্ব প্রতিনিধি: বহুদিন ধরেই মৃত্যু হুমকির শিকার হচ্ছেন বলিউড সুপারস্টার সলমান খান। জেলে বসেই তাঁকে মেরে ফেলার ফন্দি আঁটছেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। ১৪ এপ্রিল সলমনের বাড়িতে দুই দুষ্কৃতী বাইক করে এসে ধুমধাম ৪-৫ রাউন্ড গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আর সব পরিকল্পনাই লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ছিল। এমনকি তাঁর ভাই আনমোল বিষ্ণোই সলমনের বাড়িতে এমন ঘটনার দায় শিকার নেন একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। যদিও যে বন্দুক দুটি দিয়ে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছিল সেগুলি উদ্ধার হয়েছে সুরাট এবং তাপি নদীর থেকে। আর গুজরাতের ভূজ মন্দির থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। যাঁদেরকে ৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিয়ে এই কাজ করিয়েছিল লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং। তদন্তের পর পুলিশ এই মামলায় কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে নথিভুক্ত করেছে। অন্যদিকে আমেরিকায় আত্মগোপনে থাকা তাঁর ভাই আনমোল বিষ্ণোইকেও এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। সঙ্গে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ লরেন্সকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে এই গুলিবর্ষণের ঘটনা সম্পর্কিত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। গত কয়েক বছর ধরেই সলমান খানকে হত্যার কথা বলে আসছেন লরেন্স।
১৯৯৮ সালে রাজস্থানের যোধপুরে কালো হরিণ শিকারের ঘটনার পর থেকে সলমন লরেন্স বিষ্ণোইয়ের কাছে চক্ষুশূল হয়ে গিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায়, ১৪ এপ্রিল যখন লরেন্স গ্যাংয়ের দুই শ্যুটার সলমানের বাড়িতে গুলি চালায়, লরেন্সের ভাই আনমোল বিষ্ণোই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার দায় নেন। পরে, শ্যুটারদের জিজ্ঞাসাবাদের সময়, তারা উভয়ই লরেন্স গ্যাং থেকে এই কাজের জন্য চুক্তি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে, যার পরে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ বিষ্ণোই ভাইদের এই মামলায় অভিযুক্ত করেছে এবং এখন তারা লরেন্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রের খবর, শীঘ্রই লরেন্সকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে গুজরাতের সবরমতি জেলে রয়েছেন। গুজরাতের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড ২০২২ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর কচ্ছ দীপে একটি পাকিস্তানি জাহাজ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক চোরাচালানের একটি মামলায় লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম দিয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে, এটিএস তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল, তারপরে তাকে দিল্লির তিহার জেল থেকে ২৩ আগস্ট ২০২৩ সালে গুজরাটের সবরমতি জেলে আনা হয় এবং তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি এই সবরমতি জেলে বন্দী রয়েছেন। সবরমতি কারাগারকে দেশের উচ্চ নিরাপত্তা কারাগারের মধ্যে গণ্য করা হয়। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার আগে ইউপি মাফিয়া আতিক আহমেদও এই কারাগারে বন্দি ছিলেন। ৩০ আগস্ট, ২০২৩-এ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক লরেন্স বিষ্ণোইয়ের উপর CPRPC এর ধারা 268 (1) আরোপ করেছিল, যার অর্থ তাকে সবরমতি জেল থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এ কারণেই এখনও পরিবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন আদালতে তাঁকে শারীরিকভাবে হাজির করানো যাবেনা, তাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু শত্রু গুন্ডাদের কারণে লরেন্সের জীবন বিপন্ন হলেও জেলে লরেন্সের বাড়বাড়ন্ত কমছে না। তিনি কারাগার থেকে নিয়মিত ফোনে নিয়মিত কথা বলছেন। লরেন্স বিষ্ণোই ৫০ টিরও বেশি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। এর মধ্যে হত্যা, খুনের চেষ্টা, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে।