নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা: ২০২১-এর মাঝামাঝি থেকেই ত্রিপুরা বিজেপি কার্যত আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের অনুগামী ও বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের অনুগামী। তারপর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লাগাতার ক্ষোভপ্রকাশ করেন সুদীপ রায় বর্মন। এমনকি গত পুরসভার ভোটে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েই ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভপ্রকাশ করেন সুদীপ। এর মাঝেই গত ১২ জানুয়ারি বিজেপি ছেড়ে নিজের আদি দল কংগ্রেসে যাওয়ার কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন সুদীপ রায় বর্মন। যার একমাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন সুদীপ। সোমবার ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আগরতলার বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন ও বরদৌলির বিধায়ক আশিস কুমার সাহা।
পদত্যাগপত্র দিয়েই সুদীপ রায় বর্মন ক্ষোভপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘মানুষের জন্যই আমাদের রাজনীতিটা করা। মানুষের কষ্ট-দুর্দশা আর সহ্য হচ্ছিল না। আজ ইস্তফা দিয়ে অনেক হালকা লাগছে। গণতন্ত্র এই রাজ্যে বিপন্ন। যারা স্বীকৃত বিরোধী দল, তারা কিছু করতে পারছে না। এই রাজ্যে একনায়কতন্ত্র কায়েম রয়েছে। মন্ত্রীরা তাঁদের অসহায়তার কথা বলেন আমাদের। হাতে গোনা কয়েকজন অফিসার যা ইচ্ছা করছেন। মানুষের আর্তনাদ তাঁদের হৃদয়কে স্পর্শ করছে না।’ সূত্রের খবর শুধুই বিধায়ক পদে নয় বিজেপির প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন সুদীপ রায় বর্মন। একই পথেভ হেঁটেছেন আরও এক বিজেপি বিধায়ক আশিস সাহা। দু’জনেরঅ গন্তব্য দিল্লি। সূত্রের খবর, এদিন দিল্লিতে রাহুল গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করে কংগ্রেসে যোগদান করবেন সুদীপ রায় বর্মন।
২০২৩- ত্রিপুরা বিধানসভায় নির্বাচন, আর তার আগেই বিপ্লবের ঘর ভেঙে যাওয়ায় চাপে বিজেপি। ২০১৯ সালে রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয় সুদীপকে। তারপর থেকেই বিপ্লব দেবকে ক্রমাগত নিশানা করতেই থাকেন সুদীপ রায় বর্মন। গত পুরভোটের সময় থেকে যার মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। অনেকের ধারণা ছিল সুদীপ রায় বর্মন হয়ত তৃণমূলে আসবেন। কিন্তু সুদীপ নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর গন্তব্য আদি দলের দিকেই। গত বিধানসভা ভোটের আগে ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ। তার আগে তিনি ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি এবং বিরোধী নেতা ছিলেন। ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও হন। কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেন বিপ্লব দেব। এ নিয়ে তাঁর চাপা অসন্তোষ ছিল। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে পুরভোটের নির্বাচন থেকেই।