এই মুহূর্তে




ভোটের মুখে SIR-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ স্ট্যালিনের ডিএমকে

নিজস্ব প্রতিনিধি, চেন্নাই: বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) চালানোর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছেন তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। তাই এসআইআরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল তাঁর দল দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে)। দলের সাধারণ সম্পাদক আর এস ভারথী সোমবারই (৩ নভেম্বর) দলের সাংসদ ও বর্ষীয়ান আইনজীবী এন আর এনাগোর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে ওই আবেদন জমা দিয়েছেন।

গত ২৭ অক্টোবর নির্বাচন সদনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন থেকে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের ১২ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে  ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় পর্যবেক্ষণ (এসআইআর) সমীক্ষার নির্ঘন্ট ঘোষণা করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে বিহারে সফলতার সঙ্গে এসআইআর সম্পন্ন হয়েছে। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাডু, পুদুচেরি, লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, গুজরাত গোয়া, আন্দামান নিকোবর, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ  ও ছত্তিশগড়ে এসআইআরের কাজ চলবে।’ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন জরুরি। তাই ১২ রাজ্যে এসআইআর শুরু করা হচ্ছে। যাতে নিবিড় সমীক্ষার কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় তার জন্য প্রতি বুথ পিছু একজন করে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) থাকবেন। কোনও যোগ্য ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না।তবে যারা অবৈধ ও অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন, তাদের কারও নাম ভোটার তালিকায় থাকবে না। তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, ‘বৈধ ভোটারদের নাম যাতে তালিকা থেকে বাদ না যায় তার জন্য বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলও তিন-তিনবার প্রতি ভোটারের বাড়িতে পৌঁছবেন।’ এসআইআর শুরুর আগে যাতে ভোটার তালিকা কোনও কারচুপি না হয় তার জন্য এদিন রাত বারোটা থেকেই ভোটার তালিকা ফ্রিজ করা হচ্ছে। অর্থা‍ৎ ওই তালিকা নতুন করে কারও নাম সংযোজন করা যাবে না,   কারও নাম বাদও দেওয়া যাবে না।’

কমিশন জানিয়েছে, আগামী ৪ নভেম্বর থেকে বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) বাড়ি বাড়ি ফর্ম নিয়ে যাবেন। প্রথমেই দিল্লি থেকে এনুমারেশন ফর্মের সফ্টকপি নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিকদের (ইআরও) পোর্টালে পাঠিয়ে দেবে কমিশন। তার পরে সেগুলি পাঠানো হবে ছাপার জন্য। এক জন ভোটারের জন্য দুটো করে এনুমারেশন ফর্ম ছাপবে কমিশন। এখন বাংলার ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭.৬৫ কোটি। ফর্মগুলি প্রত্যেক ভোটারের বাড়িতে পোঁছে দেবেন বিএলও-রা। ফর্মের বাকি অংশ পূরণ করে উপযুক্ত নথি-সহ জমা দিতে হবে। একটি ফর্ম সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছে থাকবে। অন্যটি বিএলও নিয়ে যাবেন। বর্তমানে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন সব ব্যক্তি এনুমারেশন ফর্ম পাবেন। প্রত্যেক ভোটারের এনুমারেশন ফর্ম আলাদা। ভোটারের এপিক নম্বর, নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ-সহ ৯০ শতাংশ তথ্য ফর্মে ছাপাই থাকবে।

এসআইআরের জন্য প্রত্যেকের বাড়িতে ‘এনুমারেশন ফর্ম’ পৌঁছে দেবেন বিএলও-রা। সেই ফর্মের সঙ্গে কমিশনের বেঁধে দেওয়া ১১টি নথি দিতে হবে। রাজ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কোনও নথিই দিতে হবে না। ওই তালিকায় নাম দেখাতে পারলেই চলতি এসআইআরে তাঁদের নাম উঠে যাবে। এসআইআরে ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড গ্রহণ করতে বলেছে। কমিশন জানিয়েছে, ওই ১১টির মধ্যে যে কোনও একটি নথি এবং ২০০২ সালের তালিকায় বাবা অথবা মায়ের নাম রয়েছে প্রমাণ করতে পারলেই নতুন তালিকায় নাম উঠবে।

কমিশনের নির্দিষ্ট ১১টি নথি কী কী?

১) কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন অথবা পেনশন পান এমন পরিচয়পত্র

২) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া যে কোনও নথি

৩) জন্ম শংসাপত্র

৪) পাসপোর্ট

৫) মাধ্যমিক বা তার অধিক কোনও শিক্ষাগত শংসাপত্র

৬) রাজ্য সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের শংসাপত্র

৭) ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট

৮) জাতিগত শংসাপত্র

৯) কোনও নাগরিকের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার

১০) স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্ট্রার

১১) জমি অথবা বাড়ির দলিল

যদিও এসআইআর নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে। আগামিকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকেই বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার কথা বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও)। এসাইআরের নামে বৈধ ভোটারদের একজনের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দে্ওয়া যাবে না, এমন দাবি তুলে দুপুরেই কলকাতার রাজপথে নামছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা শ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের এসআইআর চালানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও। রবিবারই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। ওই বৈঠকেই এসআইআরের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার কথা বলেছিলেন। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডিএমকে’র তরফে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হল।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডে বিরাট সাফল্য NIA-র, শ্রীনগর থেকে গ্রেফতার আত্মঘাতী জঙ্গি উমরের সহযোগী

কর্নাটকের চিড়িয়াখানায় ৪ দিনে ৩১ টি কৃষ্ণসার হরিণের মৃত্যু, কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন

‘দিল্লি বিস্ফোরণে জড়িতদের পাতাল থেকে খুঁজে এনে কঠোর শাস্তি দেব’, হুঙ্কার অমিতের

সৌদি আরবে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় হায়দরাবাদের একই পরিবারের ১৮ সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু

ইউনূসের আবদার মানছে দিল্লি, ফেরত পাঠানো হচ্ছে না হাসিনাকে

আরজেডি বিধায়ক দলের নেতা হিসাবে ফের নির্বাচিত তেজস্বী

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ