নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অসমে এক আদিবাসী মহিলাকে ডাইনি অপবাদে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং পুড়িয়ে হত্যা করা হয় । জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে অসমের শোণিতপুরে। নিহত আদিবাসী মহিলার নাম সংগীতা কাপি। বর্তমানে তিনি তিন জন সন্তানের মা । এই ঘটনার জেরে অসম পুলিশ শোণিতপুর জেলার একটি গ্রাম থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই নৃশংস ঘটনার পর নিহতের স্বামী রাম কাপি জানিয়েছেন,’ স্ত্রী বাড়িতে রান্না করার সময় হামলাকারীরা হামলা চালায়। তারা তাকে ডাইনি বলে আখ্যায়িত করে এবং মারধর করে। আমি তাদের অনুরোধ করেছিলাম তাকে মারধর না করতে কিন্তু তাঁরা আমার কোন কথাই শোনেননি। শুধু তাই নয় আমাকেও মারধর করা হয়েছে।‘ বর্তমানে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য তেজপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি জানতে পুলিশের একটি দল গ্রাম পরিদর্শন করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার জেরে দায়ের হয়ে মামলা।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন,’ অভিযোগ উঠেছে ওই মহিলাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।‘ গত ২০১৭ সালে গুয়াহাটি হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, কোনও ব্যক্তিকে ডাইনি হিসাবে চিহ্নিত করা অপরাধ। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি ২০১৮ সালে আসাম ডাইনি শিকার (নিষিদ্ধকরণ, প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন হয়। যাতে ডাইনি শিকার নিষিদ্ধ করা যায় এবং ডাইনি শিকার থেকে ব্যক্তিদের রক্ষা করা যায়।
এই আইনে বলা হয়েছে, “যদি কেউ কোনও ব্যক্তিকে ডাইনি বলে অভিযুক্ত করে আক্রমণ করে। আর সেই আক্রমণের ফলে যদি তাঁর মৃত্যু হয়। তাহলে অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুসারে শাস্তি দেওয়া হবে।‘ উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত অসমে এই আইন থাকার পরেও কি করে এমন ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুধু তাই নয় প্রশাসনের ভুমিকা নিয়েও থাকছে সংশয়।