নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে’ সম্প্রতি একটি ঘটনা যেন আরেকবার কিংবদন্তি গায়ক ভূপেন হাজারিকার এই গানটির কথা আমাদের মনে করাল। মোটামুটি সবারই জানা, পাকিস্তানে বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৬০০ মানুষ। যা নিয়ে গোটা ভুবন তটস্থ। নানা দেশ থেকে সাহায্য পাঠানো যাচ্ছে পাকিস্তানের বাসিন্দাদের জন্যে। এবার পাকিস্তানের মানুষদের সাহায্যার্থে ছুটে এলেন স্বনামধন্য হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও অভিনেত্রী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। এবার বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটে এলেন তিনি পাকিস্তানে।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি শুধু যে একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী তা নয়, তিনি জাতিসংঘের একজন মানবতাবাদীও। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দক্ষিণ পাকিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা কবলিত এলাকায় অভিনেত্রী গিয়েছিলেন এবং আকস্মিক জায়গাগুলি তিনি পরিদর্শন করেন। সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাসব্যাপী বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় 1,559 তে। টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, জোলি প্রথমে দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচির একটি বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন, যেখানে জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে বন্যার কবলে পড়েছেন মানুষজন। সেখানেই প্রায় ৬৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে, পাশাপাশি লক্ষাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অর্ধ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। পরে, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বন্যা কবলিত কিছু এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আইআরসি, একটি বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সাহায্য গোষ্ঠীর মতে, জোলি বিধ্বংসী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়কে সহায়তা করতেই পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন। এত বড় মাপের একজন অভিনেত্রী হয়ে, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে তিনি যে এত দূর থেকে ছুটে এসেছেন, তাঁর মানবিকতায় মুগ্ধ গোটা বিশ্ব। এছাড়া জোলির সফর সম্পর্কে সরকারের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলির মধ্যে একটি জেলায় দূষিত জলের জন্যে একটি ভয়ঙ্কর রোগে আক্রান্ত হয়ে জুলাই থেকে প্রায় ৩০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে, ডাক্তাররা বন্যা থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষেদেরকে এই জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে খুব শীঘ্রই সফর করবেন বলে জানা গিয়েছে। শরীফ তাঁর বক্তৃতায় তাঁর দরিদ্র দেশে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বন্যার কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরবেন। এছাড়া আরও জানা গিয়েছে যে, বন্যায় দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।