নিজস্ব প্রতিনিধি: মিঠুন চক্রবর্তী। এককালের বলিউড-টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুপারস্টার অভিনেতা। বলা চলে, এক কালে বলিউড বলুন বা টলিউড দুই ক্ষেত্রেই ভরপুর রাজত্ব ছিল মিঠুন চক্রবর্তীর। যদিও এখনও তাঁর দাপট একচুলও কমে নি, বরং এখনও বলিউড বা টলিউড দুই ইন্ডাস্ট্রিতে ই সমপরিমাণে কাঁপিয়ে চলেছেন অভিনেতা।
যদিও বর্তমানে বলিউডের বড়পর্দায় তিনি অতটা সক্রিয় না থাকলেও মাঝে মধ্যেই ছোট পর্দায় বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চে বিচারক হিসেবে ধরা দেন সুপারস্টার। খুব শীঘ্রই, জ্যাকি শ্রফ, সানি দেওল এবং সঞ্জয় দত্তের মতো চার সুপারস্টারের হাত ধরে ‘বাপ’ ছবির মাধ্যমে ফের বলিউডে প্রত্যাবর্তন করছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তবে জানেন কী, তাঁর সাফল্য এত সহজেই আসে নি। কলকাতার ছেলে হয়েও বলিউডের মতো বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্মে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যাত্রা তাঁর পক্ষে খুব একটা সহজ ছিল না।
বিশেষ করে, নিজের গায়ের রঙের কারণে বর্ণ বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন তিনি। শুধু বর্ণ বৈষম্য নয়, বেশ কিছু কষ্টের সঙ্গে লড়াই করে আজ তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত মিঠুন চক্রবর্তী। সম্প্রতি প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী প্রকাশ করেছেন যে, ত্বকের রঙের জন্য তিনি বহু বছর উপহাসের শিকার হয়েছিলেন, যা তাঁর কাছে আজও হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা। ৮০ দশকে মিঠুন চক্রবর্তী বলিউডে স্টারডমের শীর্ষে ছিলেন তিনি, তাঁর একাধিক ছবি ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছিল।
সম্প্রতি মিঠুন চক্রবর্তী ‘সা রে গা মা পা’ লি’ল চ্যাম্পসে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তাঁর জীবনের কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করেছিলেন। তিনি জানান, “আমি জীবনে যে কঠিন সময় পার করেছি তা আমি কখনই চাই না কেউ পার করুক। প্রত্যেকেই সংগ্রাম এবং কঠিন দিনগুলির মধ্য দিয়ে নিজেকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু আমাকে সবসময় আমার গায়ের রঙের জন্য নানারকম ভঙ্গিতে ডাকা হত। আমার গায়ের রঙের কারণে আমি বহু বছর ধরে অসম্মানিত হয়েছি।”
এমনকী তাঁর সংগ্রাম এতটাই তীব্র ছিল যে তাঁকে সংগ্রামের সেই দিনগুলিতে ফুটপাতে রাত কাটাতে হয়েছিল। তাঁর কথায়, “আমি এমন দিন দেখেছি যখন আমাকে খালি পেটে ঘুমাতে হত, এবং আমি ঘুমোনোর সময় প্রতিদিনই কাঁদতাম। আসলে, এমন কিছু দিন ছিল যে আমি পরের দিন কি খাব এবং আমি কোথায় ঘুমাতে তা নিয়েই ভাবতে হত। অনেক দিন ফুটপাথে ঘুমিয়েছি৷” আর জীবনের এই কঠিন মানসিক এবং শারীরিক চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার পরেই মিঠুন চক্রবর্তী আজ একজন অন্যতম সুপারস্টার অভিনেতা।
তিনি আরও জানান,”আমি চাই না যে আমার বায়োপিক কখনও তৈরি হোক! আমার গল্প কখনই কাউকে অনুপ্রাণিত করুক, এটি মানুষকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলবে এবং মানুষকে তাঁদের স্বপ্ন অর্জন থেকে নিরুৎসাহিত করবে। তাই আমি এটা ঘটতে দিতে চাই না! আমি যদি এটি করতে পারি, অন্য কেউ এটি করতে পারে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রমাণ করতে অনেক লড়াই করেছি। হিট সিনেমা দেওয়ার জন্যে আমি কিংবদন্তি নই, আমি একজন কিংবদন্তি কারণ আমি আমার জীবনের সমস্ত যন্ত্রণা এবং সংগ্রামকে অতিক্রম করেছি।” চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী 1976 সালের সিনেমা মৃগায়া ছবির মাধ্যমে মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তবে তিনি বেশি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ৮০ শতকের ডিস্কো ড্যান্সার, ড্যান্স ড্যান্স, পেয়ার ঝুকতা নাহিন, এর মতো ব্লকবাস্টারগুলির জন্যে।