নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক যুদ্ধও গায়ে আঁচড় পর্যন্ত ফেলতে পারেনি। হিটলারের নাৎসি সেনার বন্দুকের সামনে থেকে ফিরে এসেছেন একাধিকবার। বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও বছরের পর বছর কাটিয়েছেন বিভিন্ন দেশের একাধিক অস্থায়ী ক্যাম্পে। মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখেও বেঁচে গিয়েছেন বারংবার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না রুস-ইউক্রেন সংঘাতে। রুশ সেনার ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিজের বাড়িতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ৯৬ বছর বয়সী ইউক্রেনের বাসিন্দা বরিস রোমান্সচেঙ্কো। উত্তর ইউক্রেনের শহর খারকিভের বাসিন্দা ছিলে বরিস। শুক্রবার তার আবাসনের ওপরেই বোমা ফেলে রুশ সেনা। আর সেই বোমা বিস্ফোরণেই প্রাণ হারিয়েছেন তিনি, সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন তার আত্মীয়রা।
বরিস রোমানচেঙ্কের জন্ম হয়েছিল উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে। এরপর ১৯৪২ সালে যখন সমগ্র বিশ্বজুড়ে চলছে ধ্বংসাত্মক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঠিক তখনই জার্মানির ডর্টমুন্ডে নির্বাসিত করা হয়েছিল তাঁকে। সেই নির্বাসন থেকে বেশ কয়েকবার পালানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেন বরিস। কিন্তু প্রতিবারই ধরা পড়েছেন কারও না কারও হাতে এবং প্রতিবারই বদলেছে তাঁর শিবির। এইভাবে পরপর চারটি শিবিরে পাঠানো হয় তাঁকে। সেগুলি হল- বুচেনওয়াল্ড, পিনেমেন্ডে, মিটেলবাউ এবং বার্গেন-বেলসেন। এর মধ্যে সবথেকে ভয়ঙ্কর ছিল বুকেনওয়াল্ড এবং বার্গেন-বেলসেনের নির্বাসন। ওই দুটি নির্বাসনে মিলিতভাবে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে। এমনকি বরিসের পরিবারের একাধিক সদস্য, তাঁর প্রিয় বন্ধু এমন অনেককেই হারিয়েছিলেন বরিস। কিন্তু সেই বরিসেরই মৃত্যু হল রাশিয়ার হামলায়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যাপক নিন্দা করেছে ইউক্রেন সরকার। বরিসের মৃত্যু প্রসঙ্গে ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘হিটলারের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন বরিস, কিন্তু প্তিন সেনার হাত তাঁকে খুন হতে হল।’