আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুই শাবককে নিয়ে ফুরফুরে মেজাজেই নিজের খাঁচায় বসেছিল সিংহ ও সিংহী। আচমকাই ছন্দপতন। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে ওই খাঁচায় ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি। নিজের ডেরায় অনাহুতের প্রবেশ মেনে নিতে পারেনি পশুরাজ। সঙ্গে সঙ্গে আগুন্তুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। কামড়ে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে তোলে তাঁকে। শেষমেশ মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী ঘানার আক্রা চিড়িয়াখানা। কয়েক বছর আগে আলিপুর চিড়িয়াখানায় বাঘের গলায় মালা পরাতে দক্ষিণরায়ের খাঁচায় ঢুকে প্রাণ হারাতে হয় এক ব্যক্তির। ঘানায় প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, রবিবার সব ঠিকঠাকই চলছিল। অন্যান্য দিনের মতো পর্যটকরা ঘোরাফেরা করছিলেন চিড়িয়াখানায়। ঘুরেফিরে জীবজন্তুদের দেখছিলেন তাঁরা। আচমকাই দেখা যায়, নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়েছেন এক ব্যক্তি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুটি গুটি পায়ে খাঁচার ক্রমশ ভিতরে ঢুকতে থাকেন তিনি। সেই সময় খাঁচায় দু’টি শাবককে নিয়ে বসেছিল সিংহ ও সিংহী। ওই যুবক কাছে এগোতেই সিংহ তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ওই যুবকের সঙ্গে সিংহের লড়াই চলে। তবে অসম লড়াইতে ওই ব্যক্তির আত্মরক্ষার কৌশল ধোপে টেকেনি। সিংহটি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড় দিতে থাকে। আঁচড়ে কামড়ে গোটা শরীরই প্রায় রক্তাক্ত হয়ে যায় ওই ব্যক্তির। ততক্ষণে অবশ্য সিংহকে শান্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চোট এতই গুরুতর ছিল যে শেষমেশ প্রাণ হারান তিনি।
১৯৬০ সালে তৈরি হয় এই চিড়িয়াখানায়। তার ঠিক ছ’বছর পর ১৯৬৬ সালে সাধারণ মানুষেরা এই চিড়িয়াখানায় প্রবেশাধিকার পান। যাতে কোনও জীবজন্তু পর্যটকদের কিংবা সাধারণ মানুষ জীবজন্তুদের ক্ষতি করতে না পারে তাই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকে চিড়িয়াখানা। তা সত্ত্বেও কীভাবে ওই ব্যক্তি সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়লেন তা বুঝতে পারছেন না কেউই। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেই দাবি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তবে এদিনের ঘটনায় সিংহের কোনও ক্ষতি হয়নি। এই ঘটনার পর থেকে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা আরও মজবুত করা হয়েছে।