আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বেনজির ক্ষতির মুখে পড়েছে গোটা বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা। মারণ ভাইরাসের হাত থেকে পড়ুয়াদের রক্ষায় অধিকাংশ দেশই স্কুল-কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের রাস্তায় হেঁটেছে। ফলে পঠন-পাঠন শিঁকেয় উঠেছে। উল্টে অনেক পড়ুয়াই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছে। পড়ুয়াদের এমন দুর্দশা দেখে এবার সরব হলেন জাতিসঙ্ঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটো ফোর। শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি স্কুল খুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে ফোর বলেছেন, ‘স্কুল খুলুন। পড়ুয়ারা আর অপেক্ষা করতে পারছে না।’
২০২০ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পরেই পড়ুয়াদের বাঁচাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পরে ফের খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে ওমিক্রন প্রজাতির তাণ্ডব শুরু হওয়ার পরেই অধিকাংশ দেশে ফের স্কুল-কলেজের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কুল পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউনিসেফের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এদিন পড়ুয়াদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটো ফোর এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সবসময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু শিশুদের স্কুলে রাখার জন্য সম্মিলিতভাবে আমাদের পক্ষে যা করা সম্ভব, তা করতে হবে।’
বেশ কয়েকটি দেশে টিকা ছাড়া শিশুদের স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, ‘আমরাও শিশুদের টিকাদানের পক্ষে। কিন্তু সশরীরে স্কুলে যাওয়ার জন্য টিকাদানকে পূর্ব শর্ত করার কোনও কারণ নেই। কেননা টিকা ছাড়া স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার শর্ত আরোপ মানে শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা ও তাদের প্রতি অবিচার করা।’