নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বজুড়েই আশঙ্কা ছড়িয়ে দিয়েছে Artificial Intelligence বা AI। অনেকেই একে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হিসাবেই চেনেন। আদতে এই AI হলে একধরনের মডেল রোবট যা মানুষের মতোই কাজ করে। অনেকটা বুদ্ধিও ধরে। এই ধরনের মডেল যন্ত্র বা রোবটদেরই এখন বিশ্বের বেশ কিচ্ছু দেশে নানান কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর সেখানেই উঠছে প্রশ্ন, এই AI বা Artificial Intelligence কী মানুষের কাজ কেড়ে নেবে? ভুলে যাবেন না এই ভারতের বুকে, বাংলার বুকে যখন কম্পিউটার(Computer) এসেছিল তখন তার প্রবল ভাবে বিরোধিতা করেছিল বামেরা। সেই সময়েও অভিযোগ উঠেছিল কম্পিউটার মানুষের কাজ কেড়ে নেবে। আবার হালের হলদিয়া বন্দরে যখন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসিয়ে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো ও নামানোর প্রশ্ন এসেছিল তখনও কাজ হারাবার ভয়ে তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। বাংলার কথা আপাতত বাদ থাক, মার্কিনরা কী ভাবছেন সেটা একবার দেখুন।
মার্কিনদের(USA Citizens) আমরা ধরে নিই বিশ্বের সব থেকে উন্নতমানের জীবনধারন করা মানুষজন। সব থেকে বিত্তবান সমাজ। সেই মার্কিনরা কিন্তু Artificial Intelligence বা AI-কে খুব একটা বেশি পাত্তা দিতে চাইছেন না। তার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে তাকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তাঁরা পিছুপা না হলেও এখনও তাঁরা এই Artificial Intelligence বা AI-কে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। Pew Research নামের একটি সংস্থা মার্কিনদের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল এই Artificial Intelligence বা AI-কে নিয়ে। এই বিষয়ে মার্কিনরা কে কী ভাবছেন সেটাই উঠে এসেছে এই সমীক্ষায়। আর যে সব তথ্য সেখানে উঠে এসেছে তা রীতিমত চমকে দেওয়ার মতো। যেমন ৭১ শতাংশ মার্কিনই মনে করেন কোনও বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য Artificial Intelligence বা AI’র ওপর ভরসা না করাই ভাল। দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মনে করেন মানুষকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে তার জায়গায় এই Artificial Intelligence বা AI ব্যবহার করা একদমই অনুচিত। ৪৭ শতাংশ মার্কিন মনে করেন চাকরির প্রতিযোগিতার বাজারে মানুষের থেকে ভাল পারফর্ম করে দেখাতে সক্ষম এই Artificial Intelligence। মানে ইন্টারভিউ থেকে লিখিত বা প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় তাঁরা মানুষের থেকে ভাল পারফর্ম করে দেখাতে পারবে। যদিও সে দেশের ১৫ শতাংশ মানুষ সরাসরি মনে করেন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের অশেষ ক্ষতিসাধন করবে।
বেশিরভাগ মার্কিন মনে করেন Artificial Intelligence বা AI শ্রমজীবী মানুষের কাজ কেড়ে নিতে পারবে কিন্তু বুদ্ধিমত্তার কাজে তাঁরা মানুষকে হারাতে পারবে না। দেশের ৬২ শতাংশ মানুষ মনে করেন যদি Artificial Intelligence সেদেশে কাজের জায়গায় ব্যবহার হতে শুরু করে তাহলে পরবর্তী দুই দশক শ্রমজীবী মানুষদের অশেষ দুঃখকষ্টে দিন কাটাতে হবে। তাঁদের আয় বলে কিছু থাকবে না। জীবনে নেমে আসবে চরম অসহায়তা ও অনিশ্চয়তা। আবার দেশের ২৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও খারাপ ছাপ ফেলবে। আবার ২২ শতাংশ মার্কিন Artificial Intelligence বা AI’র ফলে দেশে কী প্রভাব পড়তে চলেছে বা পড়তে পারে তা নিয়ে কিছুই অনুমান করে উঠতে পারেননি। আবার নানা অফিসে কাজ করা মার্কিনদের ৩৯ শতাংশ এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চূড়ান্ত বিরোধিতা করেছেন। কেননা তাঁদের আশঙ্কা মালিক কর্তৃপক্ষ এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতে পারেন কর্মীদের ওপর নজরদারির জন্য। তাঁরা কে কখন কী করছেন, কতক্ষন কম্পিউটারের সামনে থাকছেন আর কতক্ষণই বা তা থেকে দূরে থাকছেন। ৩১ শতাংশ কর্মী কিন্তু মনে করছেন অফিসে ও কলকারখানায় ফাঁকিবাজি ঠেকাতে মক্ষোম দাওয়াই হতে পারে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Intelligence বা AI।
