ইসলামাবাদ : ঋণের বোঝায় হাঁসফাঁস অবস্থা ওয়াঘার ওপারে। তার উপর বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার তলানিতে। যার জেরে ধুঁকতে বসেছে পাক অর্থনীতি। মুদ্রার বিপুল মূল্যহ্রাস, প্রথমে ইমরান এবং পরে শাহবাজ শরিফের সরকারের ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণে, পাকিস্তানের ঋণ গিয়ে পৌঁছেছে ৬০ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে। অসহনীয় ঋণভারে জর্জরিত পাকিস্তান কি তবে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে? ক্রমশ এই ধারণা গেড়ে বসছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের স্টেট ব্যাঙ্ক দেশের ঋণ সংক্রান্ত তথ্য সামনে এনেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত এক অর্থবর্ষে পাকিস্তানের সরকারি ঋণ ছিল ন’লক্ষ ৩০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। কিন্তু ২০২২ সালের জুনের শেষে এই ঋণ রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়ে হয় ৪৯ লক্ষ ২০ হাজার কোটি। এখানেই শেষ নয়। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ঋণ সংক্রান্ত যে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে জাতীয় অর্থনীতির তুলনায় ঋণের পরিমাণ বিপুল বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারের অবস্থাও খুব খারাপ চলতি আর্থিক বছরের প্রথম পাঁচ সপ্তাহে ২০০ কোটি আমেরিকান ডলারের বেশি হ্রাস পেয়েছে এই বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতায় এসে তাঁর পূর্ববর্তী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, দেশকে ঋণে জর্জরিত করেছে আগের সরকার। দেশবাসীকে এই ঋণের বোঝা থেকে উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তথ্য বলছে, তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকারে ৪৩ মাসে ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ হয়েছিল। গত এপ্রিলে ইমরান যখন প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরলেন, তখন সরকারের নতুন ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ১৯ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি পাক রুপি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম কর সংগ্রহ, মুদ্রার মূল্য হ্রাস, উচ্চ সুদের হার, মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির লোকসানের ফলে ইমরান আমলে সরকারি ঋণ আকাশছোঁয়া হয়েছে। বর্তমান শাহবাজ সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই এখন দেখার।