নিজস্ব প্রতিনিধি, ইসলামাবাদ: বাইরে থাকা ইমরান খানের চেয়ে জেলবন্দি ইমরান কতটা ভয়ঙ্কর তা হাড়েহাড়ে টের পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ইমরান খানকে ক্ষমতার কুর্সি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে নখদাঁত বের করে ভোট ময়দানে ঝাঁপিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী। নিজেদের হাতের পুতুল নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালানোর গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিয়েছে পাকিস্তানের আম জনতা।
শুক্রবার ভারতীয় সময় রাত নয়টা পর্যন্ত বেসরকারিভাবে ২৬২টি সংসদীয় আসনের ফলাফল জানা গিয়েছে। তার মধ্যে ১০২টি দখল করেছে ইমরান খান সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। পাক সেনাবাহিনীর পোষ্যভৃত্য নওয়াজ শরিফের দল পেয়েছে মাত্র ৭০টি আসন। বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি পেয়েছে ৫১টি আসন। নির্দল ও অন্যান্যরা জিতেছে ৪১টি আসনে। অর্থাৎ এককভাবে সরকার গড়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও দল। যদিও নওয়াজ শরিফের দলের আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ভোট গণনায় লাগাতার কারচুপি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরে ২৮ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়া সত্বেও এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফলাফল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।
পাকিস্তানে সরকার গড়ার জন্য ম্যাজিক ফিগার হল ১৩৪। অথচ তার অর্ধেকের সামান্য বেশি আসন পেয়েও ভোটে জয় পাওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর পোষ্যভৃত্য নওয়াজ শরিফ। এদিন রাতে দলীয় নেতাদের নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে কুখ্যাত পিএমএল (এন) প্রধান দাবি করেছেন, জোট গড়ে সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য মনে করছেন, পাকিস্তানে পরবর্তী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে কিংমেকারের ভূমিকা নেবেন ইমরান খান। কেননা তাঁর সমর্থিত নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন ছাড়া কোনও দল সরকার গড়তে পারবে না। যদিও ইতিমধ্যে ইমরান খানের দলের অন্যতম নেতা গহর আলি খান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় যাবেন না তাঁরা।’