নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকাল ৬ টার সময়ে যুদ্ধের সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জাতি সংঘ, রাষ্ট্রপুঞ্জের সমস্ত আবেদন, অনুরোধকে অস্বীকার করে সেই যুদ্ধের পথেই হাঁটল রাশিয়া। পাশাপাশি পুতিন ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র প্রত্যাহার করে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন। আর পুতিনের এই ঘোষণার কয়েক ঘটনার মধ্যেই ইউক্রনের রাজধানীসহ একাধিক শহরে শোনা গেল বিস্ফোরণের শব্দ। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, পুতিনের অস্ত্র ছাড়ার নির্দেশ পাওয়ার পরপরই পূর্ব ইউরোপের ক্রিমিয়া হয়ে ইউক্রেনে প্রবেশ করে রুশ সেনা। আর তার কিছুক্ষণ পর থেকেই ইউক্রেনের রাজধানী কিভ এবং তার নিকটবর্তী আরও বেশ কিছু শহর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৩৫ কিলোমিটার (২০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত একটি বড় শহর খারকিভেও একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ক্রামতোর্স্কে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে পরপর চারটি জোরালো বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া পূর্বের বন্দর শহর মারিউপোল থেকেও আরও কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে যে রাশিয়া যে কোনও মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে সেই আশঙ্কা করেই বুধবার থেকে আকাশপথ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্স্কি। পাশাপাশি তিনি এদিন দেশজুড়ে জরুরি অবস্থাও জারি করেন। তবে এর পাশাপাশি জেলেন্স্কি আরও জানিয়েছিলেন রাশিয়ার আগ্রাসনের কাছে কিছুতেই মাথানত করবে না ইউক্রেন সেনা। যদিও পুতিন সামরিক অভিযানের কথা ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেন সেনাকে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন এদিন, কিন্তু তার আগেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্স্কি ঘোষণা করে যে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শেষদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে তাঁর দেশ। এর পাশাপাশি বুধবার একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে জেলেন্স্কি রুশ নাগরিকদের কাছে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আবেদন জানান। তাঁর কথায়, একমাত্র রাশিয়ার নাগরিকরাই পারেন রাশিয়ার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং পুতিনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি ইউক্রেনের বিদ্রোহী দল ইয়াব্লোকো রাশিয়ার কাছে সামরিক সাহায্য পার্থনা করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনের এই বিরোধী দল প্রথম থেকেই রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন। মনে করা হচ্ছে ইউক্রেনের এই বিদ্রোহী দলের ডাকে সাড়া দিয়েই বৃহস্পতিবার সামরিক অভিযান ঘোষণা করেন পুতিন। তবে তার আগে অবশ্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্স্কি একাধিকবার রাশিয়ার কাছে এই অভিযান না করার আবেদন জানান। জানা যাচ্ছে বুধবার মধ্যেরাত পর্যন্ত তিনি পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে জেলেন্স্কির ডাকে সাড়া দেয়নি কেউ। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাশিয়া।