নিজস্ব প্রতিনিধি: শেষ হল চলতি বছরের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন বা 7th Bengal Global Business Summit। এদিন কলকাতার(Kolkata) আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে বসেছিল এই সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আসর। সেখান থেকেই গর্বিত কন্ঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ঘোষণা করেন যে, এবারের সম্মেলনে রেকর্ড সংখ্যার MOU সাক্ষর হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে তা ১৮৮। এর আগেকার আর কোনও বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এত বেশি সংখ্যক মউ সাক্ষরিত হয়নি। যা কার্যত বলে দিচ্ছে বাংলার বুকে বিনিয়োগ করার জন্য শিল্পপতি সহ নানা সংগঠনের মধ্যেও আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারের সম্মেলন থেকে রাজ্যে মোট ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটির লগ্নী প্রস্তাব(Investment Proposal) এসেছে।
এদিন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে নিজ বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারের শিল্প সম্মেলনে মোট ৪০টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। এই দেশগুলোকে অভিনন্দন জানান তিনি। শুধুমাত্র ব্রিটেন থেকেই ৪০ জন ব্যবসায়ী এসেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সম্মেলন শুরু হয়েছিল ৭৬০০ কোটির বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে। আর তা শেষ হল ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটির লগ্নী প্রস্তাব পেয়ে। প্রস্তাবিত লগ্নির মোট পরিমাণ ছাপিয়ে গিয়েছে গতবারের রেকর্ড। গত বছরের সম্মেলনে ১৩৭টি মৌচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ৩.৪২ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল। সেগুলিতে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। শুধু চর্মশিল্পেই দশ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এবার ১৮৮টি মউ সাক্ষরিত হয়েছে। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাই শিল্পের গন্তব্য হতে চলেছে। বাংলায় দক্ষ শ্রমিক রয়েছে, তাই বিনিয়োগ করে শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। আপনারা আপনাদের শিল্পপতি ভাই বন্ধুদের বলুন এরাজ্যে বিনিয়োগ করতে। সরকার সব রকম সাহায্য করবে। সুযোগ বার বার আসে না, যে সুযোগ এসেছে সেই সুযোগ কাজে লাগান।’
দেশবিদেশের শিল্পপতি এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সামনে বাংলায় লগ্নীর আহ্বাণ জানিয়ে মমতা এদিন বলেন, ‘বাংলাই লগ্নির সেরা ঠিকানা। এখানকার প্রশাসনের স্থায়িত্ব, ল্যান্ড ব্যাঙ্ক, জমি নীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা সব কিছু শিল্পের জন্য আদর্শ। বাংলা সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। আপনাদের স্বাগত জানাতে আমরা তৈরি। দেশে ফিরে বন্ধুদের বলুন, বাংলায় বিনিয়োগ করতে। এখানে আপনাদের কোনও অসুবিধা হবে না। বিদ্যুৎ থেকে শ্রমিক, রাস্তা থেকে জমি সবই আছে এখানে। আমরা শিল্প করিডরও তৈরি করছি। আপনারা সেখানেও বিনিয়োগ করতে পারেন। দেরী করবেন না। বাংলা আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে। দেরী করলে পরে কিন্তু আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে। বাংলা খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সেরা রাজ্য হয়ে উঠতে চলেছে। আপনারাও সেই চলার পথের শরিক হন।’