নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) নাম করে প্রতারণার ঘটনায় কলকাতা(Kolkata) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন এক মহিলা(Woman)। ধৃতের নাম মউ গুহ। তার বিরুদ্ধে ৮ জনের কাছ থেকে মোট ১২ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রবিবার রাতেই তাকে গ্রেফতার(Arrest) করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে তাকে পেশ করা হচ্ছে আদালতে। শুধু অভিষেকের নাম করেই নয়, ধৃতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে রাসবিহারীর তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমারের আপ্ত সহায়কের নাম করে, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর লেটারহেড জাল করে প্রতারণা করার। এই ঘটনার পিছনে আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বছর ৩৫-এর মৌ গুহ দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ(Tollygunge) এলাকার বাসিন্দা। ওই মহিলা নিজেকে বিধায়ক দেবাশিস কুমারের আপ্তসহায়ক হিসাবে পরিচয় দিয়ে দক্ষিণ কলকাতার একাধিক বাসিন্দাকে প্রতারত করেছে। দীপালি মিত্র নামে এক বৃদ্ধা তাঁদেরই একজন। পেশায় তিনি আবার জ্যোতিষী। এই বৃদ্ধার অভিযোগেই ধরা পড়েছে মউ। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, একদিন মউ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল হাত দেখাতে। সেখানে সে বৃদ্ধাকে বলে, ‘ভাড়া বাড়িতে থাকবেন কেন? আপনাদের সরকারি কোটায় আবাসনে ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করছি। তবে সেজন্য কিছু টাকা লাগবে।’ এই বলে বৃদ্ধার কাছ থেকে ৯১ হাজার টাকা নেয় সে। সঙ্গে দেবাশিস কুমার টাকা নেন না বলে বৃদ্ধার কাছ থেকে একটি সোনার চেনও হাতিয়ে নেয়। পরে আবার তাঁর বাড়িতে হাজির হয় মউ। তখন সে বলে, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোটায় ফ্ল্যাট বণ্টন হবে। সেই কোটাতেই ফ্ল্যাট পাবেন দীপালি দেবী। নিজের কথার প্রমাণ সাপেক্ষে সে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের লেটারহেডে একটি চিঠি দেখায়। তাতে অশোক স্তম্ভ, বিশ্ববাংলার লোগো থাকায় সেই চিঠি দেখে সন্দেহ হয়নি দিপালীর।
এরপরেও ফ্ল্যাট না পাওয়ায় দিপালী মউকে চেপে ধরেন। সেই সময় বৃদ্ধার স্বামীকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের লেটারহেডে একটি চিঠি দিয়ে ফের তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় সে। শেষে বিষয়টি টালিগঞ্জ থানায় লিখিত ভাবে জানান ওই মহিলা। তারপরেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মউ দক্ষিণ কলকাতার ৮জন বাসিন্দাকে এভাবেই প্রতারণা করে মোট ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে। এরপরেই রবিবার রাতে টালিগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর যে লেটারহেড উদ্ধার হয়েছে তা জাল বলেই জানিয়েছে পুলিশ।