নিজস্ব প্রতিনিধি: ভাঁওতাবাজি দিয়ে ভোট নেওয়া যায়, কিন্তু প্রতিশ্রুতি যে রক্ষা করা যায় না বা করা হয় না সেটা বাংলার(Bengal) মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করে দিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। ২ দিনের সফরে বাংলায় এসেছেন শাহ। তাঁর সেই সফরের দিকে বিশেষ ভাবে তাকিয়ে ছিল মতুয়ারা(Matuya)। তাকিয়ে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারাও। যদি নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বা CAA নিয়ে কোন বার্তা দেন শাহ। কিন্তু কোনও বার্তাই দিলেন না তিনি। কার্যত CAA নিয়ে নীরবই থাকলেন তিনি। আর তার জেরে ক্ষুব্ধ হল মতুয়ারা। ধাক্কা খেল বঙ্গ বিজেপিও। আর বাংলার মানুষ দেখলেন বিজেপির(BJP) ভাঁওতাবাজির আরও একটা নিদর্শন।
আরও পড়ুন ২৫এ ভোকাট্টা মমতার সরকার, ষড়যন্ত্র নিজেই ফাঁস করলেন শাহ
মতুয়ারা দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকত্বের দাবি জানাচ্ছে। রাজ্যের ৮০টি বিধানসভা কেন্দ্র মতুয়াদের দ্বারা প্রভাবিত। ১২টি লোকসভা আসনে সেই প্রভাব রয়েছে। সেই হিসাব মেপেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় এই শাহ আর বিজেপির নেতারা বারংবার বাংলায় এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এসে এই আইন প্রণয়ন ও মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানের অঙ্গিকার করে গিয়েছেন বাংলার মাটি থেকে। তার জেরে মতুয়ারা দুইহাত ঢেলে ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে। যার জেরে উনিশের ভোটে বনগাঁ, রানাঘাট, উত্তর মালদা, কোচবিহার, রায়গঞ্জে পদ্ম ফুটেছিল। কিন্তু তারপর আর এগোয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। বরঞ্চ যতদিন যাচ্ছে এই আইনের রূপায়ণ নিয়ে ক্রমশই মুখে কুলুপ আঁটছে তাঁরা। উনিশের ভোতে জিতে কেন্দ্র সরকার CAA নিয়ে একপাও এগোয়নি। এই আইনকে রূপায়িত করার জন্য সহায়ক আইন আজও তৈরি করতেই পারেনি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।
আরও পড়ুন ৩৫’র লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন শাহ, মাথায় হাত গেরুয়ার
একুশের ভোটে এসে শাহ বলেছিলেন, কোভিডকাল কেটে গেলেই তাঁরা এই আইন নিয়ে এগোবেন। কিন্তু আইন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও CAA প্রয়োগ কেন হচ্ছে না, তা নিয়ে কোনও যোগ্য জবাব দিতে পারেননি শাহ। কার্যত সেই সময় থেকেই মানুষ বুঝতে পারছিলেন এটা শাহদের নয়া ভাঁওতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর তার জেরে একুশের ভোটে কিছুটা হলেও মতুয়া ভোট ফিরে পায় তৃণমূল। একই সঙ্গে বাংলার মাটিতে বিজেপির নেতাদের পড়তে শুরু করেন মতুয়াদের ছুঁড়ে দেওয়া প্রশ্নের মুখে। বাংলার বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেকেই আশা করেছিলেন এদিনের সভা থেকে CAA নিয়ে হয়তো কোনও বার্তা দেবেন শাহ। কিন্তু সেই আশায় এদিন জল ঢেলে দিয়েছেন শাহ। নীরব থেকে গিয়েছেন এই আইন নিয়ে। আর তার জেরেই মতুয়ারা রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন যার আঁচ বিজেপিকে পোহাতে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে।