নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের(Ministry of Labour & Employment) অধীনে নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার চালু করে E-SHRAM Portal। কেন্দ্রীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলির উপস্থিতিতে চালু হয় পোর্টালটি। শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং বিভিন্ন শ্রমক্ষেত্রে অসংগঠিত শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ও কল্যাণের স্বার্থে এই পোর্টালটি চালু করা হয়। সেই সঙ্গে লক্ষ্য ছিল দেশে অসংগঠিত এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন তথ্য কেন্দ্রীভূত করে Database System-এ নথিভুক্ত করে রাখা। সেই লক্ষ্যেই দেশের প্রতিটি রাজ্যকে টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে যাতে সেই সব রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রে জড়িত শ্রমিকদের নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় আনার পাশাপাশি তাঁদের সম্পর্কিত তথ্য কেন্দ্র সরকারের কাছে থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে সেই টার্গেট পূরণের পথে দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বাংলা(Bengal)। যোজন পিছিয়ে দেশের একের পর এক বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যগুলি(BJP Ruled Double Engine States)।
আরও পড়ুন মমতার সরকারের তৎপরতায় উদ্ধার ৫৫ কোটির খাস জমি
ভারতে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। কিন্তু তাঁরা কে কি কাজ করেন, তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থান কেমন, তাঁরা কোন কোন সামাজিক সুরক্ষা পান, দৈনিক ভিত্তিতে তাঁদের মজুরি কত, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী এইসবের কার্যত কোনও তথ্যই নেই কেন্দ্র সরকারের কাছে। তবে কিছু কিছু রাজ্যের কাছে সেই তথ্য থাকে। তাই সারা দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও তা এক ছাতার তলায় আনার লক্ষ্যেই মোদি সরকার E-SHRAM Portal চালু করা হয়। এমনকি এই কাজের জন্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করাও হয়েছিল। কাজ যাতে দ্রুত হয় তার জন্য দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকাকেই নির্দিষ্ট টার্গেট পূরণের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২ বছর বাদে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় যে গতিতে কাজ হয়েছে সেই দ্রুত গতির কাজ হয়নি দেশের অনান্য রাজ্যে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিনের রাজ্যগুলি বাংলার থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে তাঁদের লক্ষ্যমাত্রার থেকে।
আরও পড়ুন লক্ষ্মীবারে সাত সকালে SSC কার্যালয়ে বিক্ষোভ, সক্রিয় পুলিশ
সম্প্রতি লোকসভায় কেন্দ্রীয় শ্রম রাষ্ট্রমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি E-SHRAM Portal-এ এখন পর্যন্ত কোন রাজ্যে কত জন অসংগঠিত শ্রমিকদের তথ্য সংগৃহীত হয়েছে সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। সেখানেই দেখা যাচ্ছে বাংলা দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে টার্গেট পূরণ করার ক্ষেত্রে। কেন্দ্র থেকে বাংলাকে ২ কোটি ৭৯ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকদের নাম নথুভুক্তকরণের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। এখন কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যাচ্ছে সেই নাম নথিভুক্তির টার্গেট পূরণে বাংলা মাত্র ২১ লক্ষে পিছিয়ে আছে। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই বাংলায় ২ কোটি ৫৮ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। বাংলার থেকে ঢের পিছিয়ে বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্য। বাংলার পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। তাঁদের টার্গেট ছিল ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ। অথচ গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত ওই রাজ্যে নাম নথিভুক্তির সংখ্যা মোটে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ৯২ হাজার ১১১ জন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে বাংলা থেকে নামনথিভুক্তকরণ সব থেকে বেশি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলায় E-SHRAM Portal-এ মোট নথিভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা ২ কোটি ৫৮ লক্ষ ৭২ হাজার ৫৯৪ জন। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদে ২৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৩০১ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২২ লক্ষ ২২ হাজার ৫৫২ জন এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ২০ লক্ষ ২ হাজার ৫১৭ জন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নাম নথুভুক্ত হয়েছে।