এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বন্দে ভারতের মাশুল গুণল কী করমণ্ডল, শুরু বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিনিধি: বন্দে ভারত এক্সপ্রেস(Vande Bharat Express) নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অতি সক্রিয়তা’র মাশুল দিতে হচ্ছে আপাতদৃষ্টিতে ‘সাধারণ’ ট্রেনগুলিকে। বন্দে ভারত তৈরি এবং চালাতে যে ব্যয় হচ্ছে, তার ‘প্রভাব’ পড়ছে রেলের সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণে। তবে এ নিয়ে এখনই কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয়ে গেল করমণ্ডল দুর্ঘটনার(Coromondol Express Accident) পরে পরেই। অনেকেই মনে করছেন কার্যত বন্দে ভারতের মাশুল দিতে হয়েছে করমণ্ডলকে। সাম্প্রতিককালে ভারতীয় রেলের সবচেয়ে বেশি প্রধান্য পেয়েছে বন্দে ভারত। তা সে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হোক কী চমক, ধমকের রাজনীতি। দেশের রেলের ইতিহাসে এখন স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করে রাখার প্রয়াস চলছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) ভারতীয় রেলে অত্যাধুনিক ট্রেন চালু করে গিয়েছেন। ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত, গরীবরথের মতো ট্রেন। চলবে শুধু বন্দে ভারত আর বুলেট ট্রেন। গুরুত্ব পাচ্ছে না যাত্রীসুরক্ষা(Passenger Safety), শুধুমাত্র ভোট পাওয়ার তাগিদে চমকই মোদি সরকারের(Modi Government) এখন প্রধান লক্ষ্য।

আরও পড়ুন ১৯ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ, সবাই কী পাবেন! উঠছে প্রশ্ন

কিন্তু দেশের রেল ব্যবস্থা যে বিপদের মুখে তা যেমন ক্যাগের রিপোর্টে আগেই উঠেছিল, তেমনি উঠে এসেছিল সংসদীয় কমিটির রিপোর্টেও। কোনওটাকেই গুরুত্ব দেয়নি নরেন্দ্র মোদির সরকার। আদতে গুতুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনবোধই করেনি। The Comptroller and Auditor General of India বা CAG’র রিপোর্টরজানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় রেলকে ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছিল সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। রেললাইন সংস্কার, রেলওয়ে ক্রসিং নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, আন্ডারপাস নির্মাণ, আরও বেশি রোলিং স্টক উৎপাদন অর্থাৎ কোচ, ইঞ্জিন, ওয়াগন তৈরি করা ছিল লক্ষ্য। ২০১৭ সালের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রীয় রেল সুরক্ষা কোষ নামে একটি তহবিলে ১ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় আগামী ৫ বছর শুধুই রেলের সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজ হবে। অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে এই কাজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। পরবর্তী সময়সীমা ধার্য হয়েছে ২০২৭ সাল। বাস্তব হল, ওই তহবিলের অর্থ রেল সুরক্ষার জন্য সামান্যই ব্যয় করা হচ্ছে। সংসদে পেশ হওয়া অন্য একটি CAG’র রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিকালে দেশে যত ট্রেন বেলাইন হয়েছে, তার অধিকাংশই রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। ২০১৭ থেকে চার বছরে মোট লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৩৯২টি। ১৬৭টি ক্ষেত্রেই প্রধান ফ্যাক্টর হিসেবে উঠে এসেছে ‘Maintenance of Track’। ১৪৪টি ক্ষেত্রে দায়ী করা হয়েছে ‘Bad Driving ও Over Speeding-কে।

আরও পড়ুন মৃত্যুমিছিল সুন্দরবনে, তবুও পা বাড়িয়ে ভিন রাজ্যের পথে

ভারতের মতো দেশে রেলসুরক্ষার অন্যতম প্রধান শর্ত হল, বেশি করে ডাবল লাইন পাতা। গত বছরের বাজেটে ডাবল লাইন নির্মাণের জন্য ধার্য হয়েছিল ৪২ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। অথচ এই বছর বাজেটে সেই খাতে বরাদ্দ এক ধাক্কায় ১২ হাজার কোটি টাকা কমে গেল। ঢাকঢোল পিটিয়ে কবচ সুরক্ষা ঘোষণা করা হয়েছিল। ৩৪ হাজার রুট কিলোমিটার যাত্রাপথের সব ট্রেনে কবচ সুরক্ষা বলবৎ করা হবে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৪০০ রুট কিলোমিটার করা গিয়েছে। এই বছর কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে সুরক্ষায়? মাত্র ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী সবথেকে বেশি উচ্চারণ করেন বুলেট ট্রেনের কথা। ১ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প। ৩২ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েই গিয়েছে। অথচ কবচ লাগানো হয়নি দেশের সিংহভাগ ট্রেনে। দেশে এখন ১৮টি বন্দে ভারত চলছে। আগামী দিনে ৪০০ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এই বছর লিক্যুইড হাইড্রোজেনে বন্দে ভারত চালাতে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে! ১০ লক্ষ টাকা!

আরও পড়ুন কেউ একটু শনাক্ত করে দেবেন…

বালেশ্বরের দুর্ঘটনার নেপথ্যে রেলের গাফিলতি এবং উদাসীনতা যে অন্যতম কারণ, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সুর চড়ানো শুরু করেছে বিরোধীরা। এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন রুটে যে সঠিকভাবে ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হচ্ছে না, সেটা ২০১৯ সালেই জানিয়েছিল রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি(Parliamentary Standing Committee)। ৩ বছর আগেই সতর্ক করা হয়েছিল, দক্ষিণপূর্ব রেলে বিপুল শূন্যপদের জন্য দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তুন মাথা ঘামায়নি মোদি সরকার। ২০১৯ সালে সংসদ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ‘এই কমিটির অনুসন্ধান অনুযায়ী কর্মীর অভাবে এই রুটে রেলের ব্রিজ এবং ট্র্যাকগুলির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মীর পদ এখনও শূন্য। এই কর্মীর অভাবে রেলে যাত্রী নিরাপত্তায় বড়সড় গলদ থেকে যাচ্ছে। মন্ত্রকের এই উদাসীনতা বিপদ ডেকে আনতে পারে।’ ২০১৯ সালে রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি এই রিপোর্ট দিলেও কেন্দ্র সেটাকে পাত্তা দেয়নি। দক্ষিণ পূর্ব রেলে নতুন করে কর্মী নিয়োগ হয়নি। উলটে শূন্যপদ আরও বেড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন ২৪ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে একসূত্রে বাঁধা পড়ল গাইসাল-বাহানাগা

২০২৩ সালের হিসাব বলছে, ৯৬ হাজার ৫৮২টি নন গেজেটেড পদের মধ্যে এখনও ১৭ হাজার ৮১১টি পদ শূন্য। ৯৩৭টি গেজেটেড পোস্টের মধ্যে ১৫০টি শূন্য। হিসাব বলছে দক্ষিণ পূর্ব এবং দক্ষিণ রেলে প্রচুর লোকো পাইলট পদে কর্মী নেই। এই দুই রেল মিলিয়েই ৭০০’র বেশি লোকো পাইলট নিয়োগ করা দরকার। অথচ সরকার সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না কবচও। প্রায় ৬ মাস আগে এই প্রযুক্তি ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ রুটে এখনও কবচ নেই। ২০১৯ সালে সংসদীয় কমিটির সেই সতর্কবার্তা কেন্দ্র মেনে নিলে আদৌ বালেশ্বরের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত কিনা, সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু তাতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা যে অনেকটা কমে যেত, তাতে সংশয় নয়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শুক্রবার রাতে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে কলকাতায় এলেন নরেন্দ্র মোদি

রাজভবনের পিস রুম মহিলাদের পিস হেভেনে পরিণত হয়েছে, কটাক্ষ চন্দ্রিমার

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের মহিলা কর্মীর

রবিবার থেকে জেলায় জেলায় শুরু হবে বৃষ্টি, সোমবার ভিজতে পারে কলকাতা

তৃণমূলের তারকা প্রচারের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন কুণাল

প্রথম চেষ্টাতেই মাধ্যমিক পাশ করে চমকে দিলেন ফুটপাতের প্রিয়া

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর