নিজস্ব প্রতিনিধি: বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি হালকা ভাবেই অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু ঠিক তার ২৪ ঘন্টা বাদে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে তিনি সরাসরি অভিযোগ আনলেন। একের পর এক বিষয়ে কেন্দ্রকে বিঁধলেন। আর মুখে বললেন, ‘বাংলার(Bengal) উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে বিজেপি(BJP)।’ বুধবার বিকালে কলকাতার আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে শেষ হল সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন বা 7th Bengal Global Business Summit 2023। সেই সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই তিনি নিশানা বানালেন বিজেপি এবং কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকারকে। তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), যার নিশানায় এদিন উঠে এসেছে Digital India, Cashless Economy, এমনকি ED ও CBI-ও।
এদিন মমতা বলেন, ‘কখনও কখনও কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখায়, কিন্তু তাঁরা স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারে না। স্বপ্ন দেখা আর বাস্তবায়নে ফারাক থাকে। স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবায়ন সবাই করতে পারে না। আমাদের স্বপ্ন পূরণ হল। অনেকে স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু সকলের স্বপ্ন পূরণ হয় না। এটা সহজ ছিল না। মানুষের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এখানে কেন্দ্রে একটা সরকার, আর রাজ্যে আরেকটা সরকার। কেন্দ্রের সরকার, রাজ্যের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। অতিরিক্ত কর চাপিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। মানসিক, শারীরিক ভাবে সুস্থ না থাকলে টাকা উপার্জন করে কী হবে? শিল্পক্ষেত্র সবসময় Green and Clean থাকবে৷ আমি একটা জিনিষ কিছুতেই বুঝতে পারছি না কেন আমাদের দেশের শিল্পপতিরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন? কেন তাঁরা সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকেন যে এই বুঝি কোনো এজেন্সি তাদের ঘাড় ধরল? কর অবশ্যই আদায় করো৷ তাই বলে অতিরিক্ত কর চাপিয়ে মানসিক চাপ তৈরি করবে?’
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যে উঠে আসে Digital India ও Cashless Economy প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র সবসময় সুন্দর। অনেক সময় আমরা অনেক বড় বড় জিনিস দেখি, কিন্তু তারা খুব বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে না। যা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করে দেখায়। Cashless প্রক্রিয়ায় অর্থনীতির কোনও উন্নয়ন হয় না।’ বস্তুত কোভিডের সময় থেকেই দেশের অর্থনীতিবিদদের একাংশ বার বার বলে আসছেন দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে হলে মানুষের হাতে বেশি করে টাকা পৌঁছে দিয়ে তাঁর ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কিন্তু এই কথা আজ অবধি কানে তোলেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার। কিন্তু বাংলার বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, জয় জোহর, জয় বাংলা, কন্যাশ্রী, মেধাশ্রী, রূপশ্রী, কৃষকবন্ধুর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এই পদক্ষেপ শুধু যে গ্রাম বাংলার বা নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির ক্রয়ক্ষমতা বড়িয়েছে তাই নয়, রাজ্যের অর্থনীতির চাকা ঘোরাতেও সাহায্য করেছে। অর্থনৈতিক ভাবে বাংলা লাভবান হয়েছে। অথচ বিজেপির নেতারা দিনরাত এই সব প্রকল্প নিয়ে মমতা ও তার সরকারকে নিশানা বানান। এদিন মমতা তাঁদেরকেই পাল্টা নিশানা বানালেন।