নিজস্ব প্রতিনিধি: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jadavpur University) প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে(Students Death) ক্রমশই রহস্য দানা বাঁধছে। কেননা অভিযোগ উঠেছে তাঁর দেহ মিলেছিল সম্পূর্ণ নগ্ন ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায়। প্রাথমিক দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের ‘এ’ ব্লকের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে ‘কোনও ভাবে’ পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পড়ুয়ার। কিন্তু এই সহজ সরল ব্যাখা মানতে নারাজ তাঁরই সহপাঠিরা। তাঁদের দাবি, ওই পড়ুয়া হস্টেলের বৈধ রেসিডেন্ট ছিল না। সে বন্ধুদের সঙ্গে থাকত। গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁরা ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান। তাঁরা দেখেন, সম্পূর্ণ নগ্ন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই পড়ুয়া। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু প্রশ্ন, রাতে কী এমন হল যে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় মরণ ঝাঁপ দিতে হল ওই পড়ুয়াকে? নাকি তাঁকে কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে?
আরও পড়ুন মমতার কলকাতায় দাম ও চাহিদা বাড়ছে ফ্ল্যাটের
জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম স্বপ্নদীপ কুণ্ডু(১৮)। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল সে। নদিয়ার হাঁসখালি ব্লকের বগুলা এলাকার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলা নিয়ে স্নাতক স্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল স্বপ্নদীপ। বুধবার তাঁর প্রথম বর্ষের প্রথম দিনের ক্লাস ছিল। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ভাল লাগলেও হস্টেলে স্বপ্নদীপের কোনও সমস্যা হচ্ছিল। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ বাবাকে ফোন করে সে বলেছিল তাঁকে নিয়ে যেতে। যদিও তা আর সম্ভব হয়নি। তার আগেই মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, যাদবপুরে রাগিংয়ের(Ragging) নামে কার্যত যৌন নির্যাতন(Sexual Torture) চলে ছেলেদের সঙ্গে। সিনিয়ার পড়ুয়াদের সঙ্গে একরকম জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয়। না হলেই পদে পদে কার্যত বেঁচে থাকাই দায় করে দেওয়া হয়। শহর ও শহরতলির পড়ুয়ারা এর সঙ্গে মেনে নিতে পারলেও গ্রাম থেকে আসা পড়ুয়ারা তা পারে না।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই নয়া ৩ আধিকারিক পেল ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
পড়ুয়াদের একাংশের আরও অভিযোগ, যত বারই এই ধরনের ঘটনা ঘটে প্রতিবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র্যাগিং ও যৌন নির্যাতনের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দেয়। এবারেও একই ঘটনা ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র্যাগিং ও যৌন নির্যাতনের যাবতীয় ঘটনা অস্বীকার করছে। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত স্বপ্নদীপের মৃত্যু কীভাবে হলে তার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। স্বপ্নদীপের দেহ এদিনই ময়নাতদন্ত করে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাঁর পরিবার ইতিমধ্যেই খুনের অভিযোগ তুলেছে। তবে নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলেননি তাঁরা। তাঁদের দাবি, বুধবার রাতে কী এমন হল যে স্বপ্নদীপ বাড়িতে ফোন করে তাকে নিয়ে যেতে বলেছিল!