নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) ক্ষোভ প্রকাশের পরই তড়িঘড়ি রেজিস্ট্রার(Registrar) নিয়োগ হল ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jhargram Sadhu Ramchand Murmu University)। একইসঙ্গে কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন(Controller of Examination) এবং ফিন্যান্স অফিসার(Finance Officer) পদেও নিয়োগ করা হয়েছে এদিন। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দীকেই ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন ও ফিন্যান্স অফিসারকে অতিরিক্ত দায়িত্বে আনা হয়েছে ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রসঙ্গত, বুধবার ক্ষোভ প্রকাশের সময় রাজ্যপালের নাম না করে মমতা বলেন, ‘ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। কিন্তু সেখানে রেজিস্ট্রার নেই। কারণ পাঠালেই উনি ওঁর মতো বিজেপির লোককে বসিয়ে দিচ্ছেন। আমি ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি, আর উনি দালালি করে আটকে দিচ্ছেন। আমরা এটা মানব না। রেজিস্ট্রার অন্তত পাঠান। পরীক্ষার সার্টিফিকেটও দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়।’ এরপরেই দেখা গেল নয়া ৩ আধিকারিক পেয়ে গেল ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন মমতার কলকাতায় দাম ও চাহিদা বাড়ছে ফ্ল্যাটের
বিশ্ব আদিবাসী দিবসে ঝাড়গ্রামে এক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর সীমাবদ্ধতার কথা। সব বিষয়ে তাঁর গাজোয়ারি মনোভাব যে রাজ্য সরকার মোটেও ভাল ভাবে নিচ্ছে সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। ঝাড়গ্রাম থেকে রাজ্যপালকে নিশানা বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যপালের আসন সাংবিধানিক। তাঁর কাজ সীমাবদ্ধ রয়েছে সংবিধানে। সবকিছু গায়ের জোরে এভাবে করতে পারেন না উনি। গায়ের জোরে রাজ্যটাকে কিনে নেওয়া যায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় করছি, উনি দালালি করে কাজ আটকে দিচ্ছেন। আমরা এখানে ঝাড়গ্রামে ইউনির্ভাসিটি করে দিয়েছি। না আছে ভিসি, না আছে রেজিস্ট্রার। কারণ পাঠালেই উনি ওঁর মতো বিজেপির লোককে বসিয়ে দিচ্ছেন। আমার মুখ্যসচিবকে অনুরোধ, ইমিডিয়েট আমাদের যে রেকমেন্ডেশন সেই রেকমেন্ডেশন হায়ার এডুকেশন থেকে করে দিতে। আগে এক জন রেজিস্ট্রার অন্তত পাঠান। পরীক্ষার সার্টিফিকেটও দিতে পারছে না। আমি ইউনির্ভাসিটি করে দিচ্ছি, আর উনি দালালি করে আটকে দিচ্ছেন। আমরা এটা মানব না। স্ট্রেট মানব না। ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমিডিয়েট ভিসি এবং রেজিস্ট্রার আমি আজকেই করে দেব।’
আরও পড়ুন ‘ভালবাসা দিয়ে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়েছি’, বার্তা কুড়মিদেরও
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গভর্নর মহাশয় এখন কালো চশমা পরেন। তিনি পরতেই পারেন, একটার জায়গায় ১০টা। জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু আমরা নাম পাঠালেও উপাচার্য নিয়োগ করেন না। রাজ্যপাল কালো চশমা পরে নিজের ইচ্ছে মতো কেরল থেকে লোক নিয়ে এসে বসিয়ে দিচ্ছে। কেরলের অনেক বন্ধুই আমাদের এখানে থাকছে, তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ভিসি হতে গেলে কমপক্ষে ১০ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ভিসি করেছেন, তিনি আবার কেরলে আইপিএস ছিলেন। যাঁর সঙ্গে এডুকেশনের কোনও যোগাযোগ নেই। ভিসি করতে গেলে তিনটে নাম পাঠাতে হয়। যদি আপনার সৎসাহস থাকে, অ্যাসেম্বলিতে যে বিলটা পাশ হয়েছে, যে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারপার্সন হবেন, চান্সেলর হবেন। সেই বিলটা আপনি সই করে দিন। ইংরেজ আমলে একটা আইন ছিল। তখন মাত্র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আজকে আমাদের এখানে ৪৪-৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গিয়েছে। উনি এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিসি কে হবে ঠিক করবেন?’