নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি অনন্য তাঁর নিজ গুণেই। বিরোধী শিবির থেকে অতিবড় অপমানকর আক্রমণ এলেও তিনি কোনওদিন ধৈর্য্য হারাননি। তাই দলের অন্দরে তিনি যেমন ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন ঠিক তেমনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছেন অতীব বিশ্বস্ত ও ভরসার পাত্র। তাই তাঁর হাতে রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব তুলে দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন কোনওদিন দ্বিধাগ্রস্থ হননি তেমনি কলকাতার দায়িত্বভার তুলে দিতেও দ্বিতীয়বার ভাবেননি। শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নয়, শাসক দলের নেতা থেকে শুরু করে কর্মী ও সমর্থকেরাও তাঁর ওপর অগাধ আস্থা রাখেন। সেই একই আস্থা কলকাতাবাসীও তাঁর প্রতি দেখিয়েছেন। একুশের পুরনির্বাচনে কলকাতাবাসী তাঁকে তো জয়ী করেইছে তাঁর ১৩৩জন সহযোদ্ধাকেও জয়ী করে কলকাতা পুরনিগমকে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে। এবার বড়দিনের প্রাক্কালে মধ্যরাতেই তাঁকে দেখা গেল একবালপুরের গির্জায় সপরিবারে উপাসনায় যোগ দিতে। তিনি কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম।
ফিরহাদ হাকিমকে বাম থেকে বিজেপি, নানান সময়ে আক্রমণে করে এসেছে এবং এখনও তাঁকে করে যাচ্ছে, তবে শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে যে ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছে তা এখন রাজ্য রাজনীতিতেও চূড়ান্ত নিন্দানীয় হয়ে উঠেছে। কারোর ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরে ব্যক্তিগত স্তরে গিয়ে এই কদর্য আক্রমণ যে ফিরহাদ অপেক্ষা শুভেন্দুকেই যে ধাক্কা দিচ্ছে সেটা জার্সি বদল করা ওই নেতার বোধগম্যই হচ্ছে না। ফিরহাদ নিজেই সম্প্রতি এই নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তাঁর একসময়ের সহযোদ্ধা এখন তাঁকে যে বাক্যবাণে অপমান করে চলেছেন তাও যে তাঁকে দুঃখ দিচ্ছে সেকথা জানাতেও ভোলেননি তিনি। তবুও নিজে কখনও পাল্টা আক্রমণে যাননি। ব্যক্তিগত স্তরে গিয়েও কাউকে আক্রমণ করেন না তিনি। মাটিতে দাঁড়িয়ে তাঁর রাজনৈতিক পদক্ষেপ করেন তিনি। ধৈর্য্য, নম্রতা ও মিষ্ঠ ভাষণ তাঁকে শুধু কলকাতাবাসীর কাছেই নয়, বঙ্গবাসীর কাছেও খুবই জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
বড়দিনের প্রাক্কালে সেই ফিরহাদই কিন্তু কলকাতার নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের সেই বার্তাই দিয়েছেন। বলেছেন, ‘পরিষেবার মানোন্নয়ন এবং পুরসভার কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সবার আগে কাউন্সিলরদের সৎ ও কর্মঠ হতে হবে। পাড়ার যে যুবক সাধারণ মানুষের জন্য শ্মশানে ছুটে যান অথবা ভোটার ও রেশন কার্ড তৈরিতে পাশে দাঁড়ান, কাউন্সিলরদেরও তাঁর মতো করেই ছুটে যেতে হব। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ালে তবেই কাউন্সিলরেরা আবার জিতে ফিরবেন। সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি করে দায়বদ্ধ থাকতে হবে কাউন্সিলরদের। মানুষ ডাকলেই যাতে কাউন্সিলরেরা সাড়া দেন, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে তাঁদের।’