নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) সঙ্গে ২ ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান রাস্তা হল কোনা এক্সপ্রেসওয়ে(Kona Expressway) যা বিদ্যাসাগর সেতুর(Vidyasagar Setu) মুখ থেকে শুরু হয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবধি গিয়েছে। সেই রাস্তাতেই পড়ে সাঁতরাগাছি সেতু(Santragachi Bridge)। গত শনিবার থেকে সেই সেতুতেই সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তার জেরে ওই সেতু দিয়ে রাতের বেলায় যান চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে যেমন বন্ধ রাখা হচ্ছে তেমনি দিনের বেলায় শুধুমাত্র যাত্রীবাহী বাস ও ছোট যান একটিমাত্র লেন দিয়ে চালানো হচ্ছে। যাবতীয় ভারী যানবাহণ ও পণ্যবাহী গাড়ি ভিন পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল অর্থাৎ সোমবার ছিল সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন। আর সেই দিনেই সাঁতরাগাছি সেতুতে তীব্র যানজট দেখা গিয়েছিল ১টি মাত্র লেন দিয়ে যাত্রীবাহী বাস ও ছোট যান চালাতে গিয়ে। কিন্তু এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ড্রোনের(Drone) সাহায্য নিয়ে পুলিশ যানযট কাটাতে নামে সকাল থেকে। আর তার জেরে সুফলও মিলেছে। গতকালের তুলনায় এদিন অনেকটাই কম যানজট চোখে পড়ছে সাঁতরাগাছি সেতুতে।
আরও পড়ুন মোদিকে নিয়ে গান বাঁধলেন দিনহাটার শিল্পী তিতুমীর
সাঁতরাগাছি সেতুর ওপর একটিমাত্র লেন দিয়ে যানচলাচল করায় সমস্যা তৈরি হলেও তা সামাল দিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে হাওড়া সিটি ট্রাফিক পুলিশ। সোমবারের মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেজন্য ড্রোনের ব্যবহার শুরু করেছে পুলিশ। ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে দশ মিনিট অন্তর অন্তর যাতে দু’দিকের গাড়ি ছাড়া হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে এদিন জানানো হয়েছে,ীই সেতু ঘিরে তৈরি হওয়া যানজট কাটাতে সাঁতরাগাছি ও হাওড়া শহর এলাকায় প্রায় তিন হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় করা হচ্ছে যান নিয়ন্ত্রণ। সেতুর ওপরে দু’পাশের গাড়ি ছাড়ার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের অন্তর রাখা হচ্ছে। এছাড়াও কিছু ছোট গাড়ি দাশনগর-শানপুরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে বিদ্যাসাগর সেতু মারফত আন্দুল রোড হয়ে কিছু গাড়ি পাঠানো হচ্ছে জাতীয় সড়কে। এরফলে যানজট এড়ানো অনেকটাই সম্ভব হচ্ছে।
আরও পড়ুন ডিএ কী নেবেন, আগে সম্পত্তি আর আয়ের হিসাব দিন
সাঁতরাগাছি সেতু যখন তৈরি হয়েছিল তখন হিসাব করা হয়েছিল এই সেতু দিয়ে দিনে বড্ডজোর ৩০ হাজার গাড়ি চলাচল করবে। কিন্তু এখন এই সেতু দিয়ে নিত্যদিন প্রায় ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। এর একতা বড় অংশই ভারী পণ্যবাহী গাড়ি। সেতু বিশেষজ্ঞরা বার বার বলেছেন এই সেতু ভেঙে দিয়ে সেখানে নতুন সেতু গড়তে যা এইসব ভারী পণ্যবাহী গাড়ির ভার নিতে পারবে। রাজ্য সরকারও নতুন সেতু গড়তে চায়। কিন্তু রেল জমি না দেওয়ায় এখনও ওই সেতু নির্মাণের কাজ শুরুই করতে পারেনি রাজ্য সরকার। তাই অনিচ্ছা সত্ব্বেও এই সেতু সংস্কার করেই চালাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন বাংলার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে এলেই এবার বাজবে সাইরেন
সেই সংস্কারের কাজই শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। এর জন্য সেতুর ওপর দিয়ে রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত যাবতীয় যানচলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাত ১০টার পর কলকাতা থেকে বেড়িয়ে আসা মালবাহী গাড়ি দ্বিতীয় সেতুর টোল প্লাজা হয়ে আন্দুল রোডের ওপরের রাস্তা ধরে যাতায়াত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। আর কলকাতামুখী গাড়ি ওইসময় নিবেদিতা সেতু হয়ে শহরে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, সাঁতরাগাছি সেতুতে জাতীয় সড়ক অভিমুখের লেনে ২০১৬ সালে এক্সটেনশন জয়েন্ট সংস্কার করা হলেও কলকাতা অভিমুখী লেনের ক্ষেত্রে তখন তা করা হয়নি। এখন সেই কাজটাই করা হচ্ছে। মোট ২১টি এক্সটেনশন জয়েন্ট সংস্কার করা হচ্ছে কলকাতা অভিমুখী লেনে। এই সংস্কারের কাজ না হলে বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত যে কোনও দিন। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এই তথ্য উঠে আসায় রাজ্য সরকার দ্রুত এই সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে।