নিজস্ব প্রতিনিধি: রেশন বণ্টন দুর্নীতির(Ration Distribution Scam) মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা Enforcement Directorate বা ED’র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriya Mallik) ওরফে বালু। এদিন তাঁর ED’র হেফাজতে থাকা দিন শেষ হচ্ছে। সেই কারণে এদিনই তাঁকে ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ED। তার আগে তাঁকে সল্টলেকের CGO Complex’র ED’র কার্যালয় থেকে বার করে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুরের Command Hospital-এ। সেখান থেকে বেড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে পড়ে বালু জোর গলায় বলে ওঠেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ। আমি নির্দোষ।’ সেই সঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এরা যা করেছে, অন্যায়, অনৈতিক কাজ করেছে। কোর্ট নিশ্চয়ই বিচার করবে।’
গত শুক্রবার ED’র সঙ্গে হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষায় যাওয়ার পথে জ্যোতিপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন যে, দিন চারেক পরেই সবাই সব কিছু জানতে পারবেন। এর ভিত্তিতেই অনেকেই মনে করেছিলেন এদিন হয়তো বালু আদালতে কিছু বোমা ফাটাতে পারেন। যদিও এদিন সেই অর্থে তিনি সেরকম বিস্ফোরক কিছু দাবি করেননি। এদিকে বালুর মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্তসহায়ক(PA) অভিজিৎ দাস এদিন এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশেই তাঁর মা এবং স্ত্রীকে সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছিল। মন্ত্রীর সংস্থার ডিরেক্টর করতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। মন্ত্রীর ‘অনুরোধ’ তিনি ফেলতে পারেননি। তবে আপ্তসহায়ক পদ থেকে সরে আসার সময় মা এবং স্ত্রীকেও সরিয়ে এনেছেন অভিজিৎ। উল্লেখ্য, ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক হিসাবে কাজ করেন অভিজিৎ।
এদিন তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার মা এবং স্ত্রীকে সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল। মন্ত্রী যখন নির্দেশ দেন, তা তো পালন করতেই হবে। তাঁর অনুরোধও এক প্রকার নির্দেশই। আমি ED-কে সবই জানিয়েছি। ওই সংস্থায় কী লেনদেন হয়েছিল, জানি না। ২০১৪ সালেই আমার মা এবং স্ত্রী সংস্থা থেকে সরে আসেন।’ যে সংস্থার কথা অভিজিৎ এদিন দাবি করেছেন আদতে তা দুটি পৃথক পৃথক সংস্থা। এগুলি হল – হনুমান রিয়েলকর্ন প্রাইভেট লিমিটেড এবং গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড। দু’টি সংস্থাতেই শেয়ারের মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি ED’র। এই সংস্থা দু’টিতেই অভিজিতের মা এবং স্ত্রী ডিরেক্টর করা হয়েছিল। সংস্থাগুলিতে খোঁজখবর করেই অভিজিতের নাম জানতে পেরেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। ডিরেক্টরের সূত্রেই অভিজিৎ পর্যন্ত পৌঁছান তাঁরা।