নিজস্ব প্রতিনিধি: ভাঁড়ে মা ভবানী দশা কলকাতা পুরনিগম বা KMC’র। আয়ের তুলনায় খরচ বাড়ছে হু হু করে। আর সেই খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকেরা। তার ওপরে রয়েছে বিপুল ঋণের বোঝা। সেই সঙ্কট কাটাতে স্বাভাবিক ভাবেই আয়ের নতুন রাস্তা খুঁজতে হচ্ছে পুরনিগমের আধিকারিকদের। আর সেই লক্ষ্যপূরণ করতে গিয়ে ব্যবসায়ী এবং দোকানদারদের Trade License Fee এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ানো হয়েছে জঞ্জাল সাফাইয়ের Fee-ও। কারও কারও ক্ষেত্রে এই দু’রকম Fee ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। খোঁজ নিতে জানা গিয়েছে শহরের এক রেস্তরাঁর ক্ষেত্রে এই দুই ফি মিলে বছরে দিতে হতো ২২০০ টাকা। সেটাই এ বার হয়েছে ৮০ হাজার! ফলে Trade License নবীকরণেও সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) শরণাপন্ন হয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন ২০১৪’র TET-এ ৮২ নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের Interview-এ ডাকল পর্ষদ
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নতুন অর্থবর্ষ থেকে দোকান ও অফিসের Trade License Fee যে হারে বাড়ানো হয়েছে, সেটা অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। দোকান কিংবা অফিসের জঞ্জাল অপসারণেও পুরনিগম একটা Fee নেয়। যে সব দোকান থেকে প্রচুর জঞ্জাল তৈরি হয়, শুধুমাত্র তাদের কাছ থেকেই এতদিন জঞ্জাল Fee নেওয়া হতো। কিন্তু এ বছর থেকে সবার কাছ থেকেই জঞ্জাল Fee আদায় করা হচ্ছে। শহরে থাকা সর্বসাকুল্যে ৫০০ বর্গফুটের অফিসে এতদিন জঞ্জাল Fee দিতে হতো ৭০০ টাকা। সেটাই এবার বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার টাকা। শপিং মলের ক্ষেত্রেই আবার সেই জঞ্জাল ফি ধার্য হয়েছে বছরে ৩০ লক্ষ টাকা। সেখান যে সব দোকান ও স্টল রয়েছে, তাদের থেকেও আলাদা করে জঞ্জাল Fee আদায় করছে পুরনিগম। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সেই জায়গা থেকেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। বিষয়টি কানে গিয়েছে মেয়র ফিরহাদ হাকিমেরও(Firhad Hakim)।
আরও পড়ুন মমতার বাংলায় বাড়ছে বয়স্কদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী
যদিও এই বিষয়ে কলকাতা পুরনিগমের জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘দোকানের জঞ্জাল সরাতে পুরনিগমকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। পুরনিগম কোথা থেকে টাকা পাবে? যারা যতটা জঞ্জাল তৈরি করে সেই মতো জঞ্জাল Fee ধার্য করা হয়। সেই টাকাটাই কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।’ ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ কানে যেতেই ফিরহাদ জানিয়েছেন, ছোট ব্যবসায়ীদের অর্থাৎ যাদের দোকানের আয়তন ৫০০ বর্গফুটের নীচে তাঁদের ক্ষেত্রে Trade License Fee কমিয়ে দেওয়া হবে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির অবশ্য দাবি, সবার জন্যেই Trade License ও জঞ্জাল সাফাই Fee কমানো হোক। তা না হলে ব্যবসা চালানোই মুশকিল হবে। এই প্রসঙ্গে Forum for Traders Organization(West Bengal)’র সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে জানিয়েছেন, ‘কোভিডকালে লকডাউনের পর থেকে ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ। এই অবস্থায় তাঁদের যদি Trade License ও জঞ্জাল সাফাই Fee বাবদ মোটা টাকা দিতে হয় তা হলে খুবই সমস্যা। বিষয়টি আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন, বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখবেন।’