নিজস্ব প্রতিনিধি: যারা দেশের ইতিহাস বদলে দিচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধেই এবার নতুন ইতিহাস গড়ার যাত্রা শুরু হয়ে গেল পাটলিপুত্রের মাটি থেকে। যে পাটলিপুত্র একদিন দেশের মাথা হয়ে উঠেছিল, দেশকে নেতৃত্ব দিত, সেই পাটলিপুত্র তথা আজকের পটনার (Patna) মাটি থেকেই শুরু হয়ে গেল মোদি রাজকে (Modi Government) দেশের শাসকের আসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। শুক্রবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের(Nitish Kumar) উদ্যোগে পাটনায় বসেছিল বিজেপি(BJP) বিরোধী দলগুলির জোট বৈঠক। সেই বৈঠক পটনাতেই ডাকার জন্য নীতীশকে অনুরোধ করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনেই মমতা শুনিয়ে দিলেন, ‘History Should Be Change From Bihar’।
আরও পড়ুন শুভেন্দুকে ধাক্কা দিয়ে কেন্দ্র মেনে নিল বাহিনী অপর্যাপ্ত
এদিন দেশ বিদেশের সংবাদমাধ্যমের সামনে দেশের শাসকদলকে কার্যত তুলোধনা করেন, ঠিক যেভাবে মোদি নিজের খুশি মতন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের, গান্ধি পরিবারকে, কংগ্রেসকে এবং বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে অপমান করেন। এদিন মমতা সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই গর্জে উঠে বলেন, ‘দেশে তানাশাহী চলছে। দেশের ইতিহাস বদলে দিচ্ছে। আমাদের রাষ্ট্রদ্রোহী বলছে। বন্ধ করুন এটা। আমরাও ভারতীয়। আমরাও দেশপ্রেমিক। আমরাও এই দেশের নাগরিক। মণিপুর জ্বললে আমাদেরও ঘর জ্বলে। বিজেপি একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। বাংলায় প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হচ্ছে, রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই পালিত হয়েছে। বেকারত্বের সমাধান নিয়ে কথা বলে না কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে যেই কথা বলে তার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগিয়ে দেয়। মিডিয়াকে তো পুরোপুরি কন্ট্রোল করে। মেয়েদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, কিন্তু তা নিয়েও কিছু বলে না। আমরা এই রাজত্বের অবসান ঘটাতে দিল্লি থেকে চেষ্টা করেছি। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি। তাই ভাবলাম এবার বিহারের মাটি থেকে প্রয়াস শুরু হোক। কেননা আপনারা জানেন, দেশ বদলের যাত্রা যা বিহারের মাটি থেকে শুরু হয়েছে তা কখনই বিফল হয়নি। আজ বেশ কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। আগামী দিনের আবার বৈঠক হবে। আমরা এক। ঐক্যবদ্ধ ভাবেই আমরা লড়াই করবো। বিজেপি কোনও প্রোপাগান্ডা চালালে আমরা সন্মিলিত ভাবেই তার বিরোধিতা করব।’
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন ১২টি রুটে চলবে সরকারি বাস
এর পাশাপাশি মমতা তুলে ধরেন কথায় কথায় বাংলাকে বঞ্চনা করার কথা। তুলে ধরেন ১০০ দিনের বকেয়া টাকা না পাঠানোর কথা। আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখার কথাও। কার্যত এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মমতাই বিজেপির বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি সরব হন এবং তাঁর সুরও ছিল আর সবার থেকে চড়া। একই সঙ্গে এদিনের বৈঠকে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে এখনই জোটের মুখ হিসাবে কাউকে তুলে ধরা না হলেও সেই জায়গায় আপাতত দুটি মুখ নিয়েই মূল আলোচনা চলবে। একটি রাহুল গান্ধি এবং অপরটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলার বুকে আগামী ১০ অথবা ১২ জুলাই বিরোধীদের পরবর্তী বৈঠকটি হবে। সেখানেই আসন রফার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।