নিজস্ব প্রতিনিধি: খবরটা দেখে কেউ চমকে উঠবেন না। কিন্তু খবরটা খুবই সত্যি খবর, ১,১১৩ কোটি টাকার দেনায়(Debt) ডুবে আছে রাজ্যের সর্ববৃহৎ পুরসভা কলকাতা পুরনিগম(KMC)। যদিও পুরনিগম কর্তৃপক্ষের দাবি, সব দেনাই আস্তে আস্তে মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পুরনিগমের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, কিছু দেনা শোধ হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খরচ, বাড়ছে দেনাও। এর অন্যতম কারণ পুরনিগমের নিজস্ব আয়ে(Income) ঘাটতি পড়েছে। অর্থাৎ ভালভাবে পুরনিগম চালাতে হলে যে আয়ের প্রয়োজন তা এখন প্রতি মাসে দেখা যাচ্ছে না। আয় বাড়াতে না পারলে এই দেনার পরিমাণ যেমন আরও বাড়বে তেমনি পুরনিগমের ভাবমূর্তিও খারাপ হবে বলে মনে করছেন পুরআধিকারিকদের একাংশ।
আরও পড়ুন মধ্যরাতে মহাবার্তা মমতার, দিলেন লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে, গত বছরের মে মাস পর্যন্ত প্রায় ১,২৬৫ কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্প খাতে ঠিকাদারদের কাছে পুরনিগমের দেনা ছিল। এর মধ্যে গত বছর জুনের মধ্যে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দেনা শোধ করা হয়। তারপরও বাকি ছিল প্রায় ৮৬৫ কোটি টাকা। গত এক বছরে সেই দেনার পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রায় ১,১১৩ কোটি টাকা দেনার ‘বোঝা’ চেপেছে কলকাতা পুরনিগমের ঘাড়ে। যার মধ্যে রয়েছে অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন(Pension) ও গ্র্যাচুয়িটির(Gratuity) টাকাও। পুরনিগমের অর্থবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের ৫৩৮ কোটি, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ৫৩৬ কোটি এবং ২০২০-২১ সালের প্রায় ৩৯ কোটি টাকা দেনা মেটানো বাকি আছে। পুরকর্তাদের দাবি, পাওনাদারদের প্রায় দু’বছরের টাকা এখনও পর্যন্ত মেটানো যায়নি। রেকর্ড পরিমাণে আয় বৃদ্ধি পেলেও দৈনন্দিন খরচ, কর্মীদের বেতনের টাকা জোটাতেই ৮০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ হয়ে যাচ্ছে। ফলে দেনা মেটাতে গিয়ে কলকাতা পুরনিগমের এখন হিমশিম অবস্থা। ভাঁড়ারের অবস্থাও সঙ্গীন।
আরও পড়ুন ২২ মে রাজ্যে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, নবান্নকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
পুরনিগমের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, এপ্রিল থেকে জুন এবং নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়ে। কিন্তু তার পরেও যদি প্রতি মাসে অন্তত ১০০ কোটি টাকা আয় হয় তাহলে পুরনিগম ভালোভাবে চালানো যায়। কিন্তু নিয়মিত ভাবে পুরনিগমের প্রতি মাসে ১০০ কোটির আয় হচ্ছে না। ফলে প্রতি মাসেই কিছু না কিছু ধারবাকি থেকে যাচ্ছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রায় ৩৯ কোটি টাকা মেটানো হবে। বাকি টাকাও দ্রুত মেটানোর চেষ্টা চলছে। হয়তো সেভাবেই আস্তে আস্তে দেনার পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের দাবি, খরচ কমিয়ে আয় না বাড়ালে এই দেনা কোনওদিনই কমবে না বরঞ্চ তা দিন দিন আরও বাড়বে।