নিজস্ব প্রতিনিধি: শহরে ফের মরণোত্তর অঙ্গদানের নজির। এক মহিলার অঙ্গে প্রাণ ফিরে পেলেন তিন জন। প্রয়াত ওই মহিলার নাম সোহিনী বসু। দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগে ৩৯ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা তিনি। মৃত্যুর পর ওই মহিলার অঙ্গদান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর স্বামী।
হরিদেবপুরের বাসিন্দা সোহিনী বসুর মৃগী রোগ ছিল। গত ২৯ আগস্ট আচমকা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে থাকে। সোহিনীকে তাঁর স্বামী তারাপ্রসন্ন দত্ত উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। তাঁর চিকিৎসা শুরু করার পর চিকিৎসকরা জানান, ওই রোগীর মৃগির খিঁচুনির ফলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কমে গিয়ে হাইপক্সিয়া হয়েছিল। মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছয়নি দীর্ঘক্ষণ। চিকিতসাধীন অবস্থায় বুধবার ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে ওই মহিলার ব্রেন ডেথ হয়। মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর সোহিনীর পরিবারের সম্মতিতে মরণোত্তর অঙ্গগুলি প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়। ওইদিন গভীর রাতে তাঁর লিভার ও দু’টি কিডনি দান করে দেওয়া হয় তিনজন রোগীকে। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর দেহে লিভার, আরএন টেগোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর দেহে একটি কিডনি এবং কম্যান্ড হাসপাতালের এক রোগীর শরীরে আরেকটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। ওই মহিলার হার্ট প্রতিস্থাপন করার জন্য কোনও গ্রহীতা মেলেনি।
এই গোটা বিষয়টি নিয়ে আমরি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ রূপক কুণ্ডু জানান, ভর্তির সময় থেকেই ওই রোগিণী কোমায় ছিলেন। তাঁর রক্তচাপ এতটাই কম ছিল যে যন্ত্রে মাপা যাচ্ছিল না। পরে বোঝা যায়, তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়েছে। তবে মূল সমস্যা খিঁচুনির কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি বা এপিলেপ্টিক শক। অঙ্গদান নিয়ে মৃত সোহিনীর স্বামী তারাপ্রসন্ন দত্ত জানান, ‘আমার স্ত্রী অন্যের মধ্যে বেঁচে থাকবে এর চেয়ে মহৎ কিছু হয় না।’