নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়েই আমলাতন্ত্রের পরিকাঠামোতে পরিবর্তন করতে চাইছে কেন্দ্র। এতে কেন্দ্র-রাজ্য যুক্ত্রারাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিয়ে গোটা দেশেই আমলাদের নিজেদের হাতে নিতে চাইছে মোদি সরকার। যার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগেই এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন ক্ষুদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ফের সপ্তাহের মধ্যেই সেই বিষয়ে চিঠি দিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মমতা। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৫৪ সালে আইএএস (ক্যাডার) আইন সংশোধন নিয়ে অনড় কেন্দ্র। এই আইন সংশোধন আসলে দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত।
এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীকে প্রথমবার চিঠি দিয়েছিলেন ১৩ জানুয়ারি। আজ, ২০ জানুয়ারি ফের বিষয়টিতে ক্ষোভ জানিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিলেন মমতা। বৃহস্পতিবারের দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, আমলারা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের প্রতিটি মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই প্রেক্ষিতে যদি তাদের গতিপথ কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করে, তাহলে কাজের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে। এর ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরোধ আরও বাড়বে। রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কোনও আমলাকে কেন্দ্র যদি সরিয়ে নেয়, তাহলে তা নিঃসন্দেহে রাজ্যের অধিকারের হস্তক্ষেপ। তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ক্ষেত্রেও বিপদজ্জনক।
কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনের প্রশ্নে সাধারণ ভাবে রাজ্যের মতামত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন আমলা মহলের অনেকে। তাঁদের যুক্তি, রাজ্যের সম্মতি বা ছাড়পত্র না-থাকলে কোনও আইএএস বা আইপিএস অফিসার কেন্দ্রের ডেপুটেশনে যোগ দিতে পারেন না। কিন্তু অনেকের বক্তব্য, কেন্দ্র ডেপুটেশনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বজায় রাখলে সার্ভিস রুলের ৬(১) ধারা অনুযায়ী রাজ্যের কিছু করার নেই। দেশের রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত সর্বভারতীয় ক্যাডার অফিসারদের নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিবাদ বাধলে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই মানতে হবে রাজ্যকে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, ‘বিবাদ’ এড়াতে ক্যাডার আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার বাধ্যতামূলক প্রয়োগের পথেই হাঁটতে চাইছে কেন্দ্র। এক বার আইএএস-দের ক্ষেত্রে সংশোধিত আইন চালু করা গেলে আগামী দিনে হয়তো আইপিএস অফিসারদের ক্ষেত্রেও তেমনই পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। আর সেটাই বিপজ্জনক বলে মোদিকে ফের চিঠি দিয়েছেন ক্ষুদ্ধ মমতা।