নিজস্ব প্রতিনিধি: শুক্র সকালে মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনাকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলকাতার(Kolkata) বেহালা(Behala) এলাকার বড়িশা(Barisha)। মাটি বোঝাই একটি লরির ধাক্কায় সেখানে মৃত্যু হয় মাত্র ৫ বছর বয়সী এক স্কুল পড়ুয়ার। গুরুতর ভাবে জখম হয় তার বাবাও। সেই দুর্ঘটনা ঘিরে ক্ষিপ্ত জনতা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ডায়মন্ডহারবার রোড। সেই বিক্ষোভ হঠাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ক্ষিপ্ত জনতা একের পর এক সরকারি বাস, পুলিশের গাড়ি, বাইক ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে পাথর ছোঁড়া হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। তাতেই জনা ৬ পুলিশকর্মী আহত হন। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে প্রশাসন। সেই সঙ্গে জানা যায় ঘাতক লরিটিকে হাওড়ার(Howrah) সাঁতরাগাছি(Santragachi) থেকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন সাত সকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘিরে রণক্ষেত্র বেহালা
বিক্ষোভকারীদের দাবি, দুর্ঘটনার পর পরই তাঁরা ঘাতক লরিটিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও পুলিশ লরিটিকে ছেড়ে দেয়। পরে অবশ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার সাঁতরাগাছির কাছে জগাছার বাবলাতলায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ওই লরি চালককে আটক করেছে হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিশ। তাঁকে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনায় পর থেকেই তাঁরা ঘাতক লরিটিকে ধরতে তৎপর হয়ে পড়েন। তার জন্য বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেই সময়ই ঘাতক লরির চালককে আটক করে হাওড়ার ট্র্যাফিক পুলিশ। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে লরিটি নিয়ে পালাচ্ছিলেন ওই চালক। বাবলাতলার কাছে তাঁকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন World Bank ও AIIB’র ঋণ পেতেও বাগড়া কেন্দ্রের
এদিনের দুর্ঘটনার পরে ক্ষিপ্ত জনতার মূল অভিযোগ ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ দায়িত্ব পালন করে না বলেই নাকি প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এলাকায়। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়। এদিন ক্ষিপ্ত জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বড়িশা হাই স্কুলের সামনেই ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের সেল। তাতে স্কুল ক্যাম্পাস ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়ারাও। সেই সময় অভিভাবকরা স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেন। পুলিশও ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে। বিশৃ্ঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় স্কুলে। গোটা ঘটনায় পুলিশে বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে কার্যত কেঁদে ফেললেন বড়িশা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। কেন স্কুল চত্বরে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটানো হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, তিনি একাধিকবার পুলিশকে জানিয়েছেন ওই এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে। কারণ, ওই এলাকা দুর্ঘটনাপ্রবন। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।