নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি মাসের ২২ তারিখেই উদ্বোধন হতে চলেছে অযোধ্যার(Ayodhya) বহু প্রতীক্ষিত রামমন্দিরের(Rammandir)। সেই মন্দিরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। সেই মন্দির উদ্বোধনের আগেই সেই অনুষ্ঠানকে তীব্র কটাক্ষ হানলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সাফ জানালেন, ‘আমায় জিজ্ঞাসা করছিল রাম মন্দির নিয়ে কী বক্তব্য। আমার যেন আর কোনও কাজ নেই। এই একটাই কাজ। আপনারা করুন ভোটের আগে গিমিক শো। আমি বলেছি, ধর্ম যার যার ঈশ্বর সবার। ভোটের আগে রামমন্দির একটা গিমিক ছাড়া আর কিছুই নয়।’ মমতার এহেন কটাক্ষ নিয়ে এখন বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই বলছেন তিনি হিন্দুত্বের আবেগে ধাক্কা দিয়েছেন। হিন্দু ধর্মকে অপমান করেছেন। যদিও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে রামমন্দিরের উদ্বোধনকে সামনে রেখেই দেশজুড়ে ২৪’র ভোট(General Election 2024) প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিজেপি(BJP)। সেখানে গুরুত্ব পায়নি বেকারত্ব, গুরুত্ব পায়নি দেশের উন্নয়ন, গুরুত্ব পায়নি মূল্যবৃদ্ধি।
এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা লাগোয়া বহড়ুতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভা থেকেই তিনি রামমন্দির নিয়ে মুখ খোলার পাশাপাশি বিলকিস বানুর(Bilkis Banu) মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়েও যেমন মুখ খোলেন তেমনি গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ মনোভাব নিয়েও মুখ খোলেন। গতকাল গুজরাত দাঙ্গার বহু চ র্চিত ঘটনা বিলকিস বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে অপরাধীদের ২ মাসের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ ও সংশোধানাগারে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই ঘটনার জেরে কাল ট্যুইট করে মমতা লিখেছিলেন, ‘এরকম শক্তিশালী এক রায় দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানাই। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে দোষীরা এখন নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধীদের সাহায্য করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ তৃণমূলের অধুনা লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্র অভিযুক্ত ১১ জনের মুক্তির বিরুদ্ধে পৃথকভাবে মামলা করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। সেই ঘটনা টেনে এদিন মমতা বলেন, ‘আমাদের লোকের ওপর অনেক অত্যাচার চলছে। দেশ চলছে একটা এজেন্সি দিয়ে। বিলকিস বানু মামলায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হল। সেখানে আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্র ছিলেন। তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেও পার্টি ছিল। এটা কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের জয়। আমরা রেপিষ্টদের প্রশ্রয় দিই না।’
এর পাশাপাশি মমতা এদিন মুখ খোলেন গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে। গতকালও তিনি এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘গঙ্গাসাগর(Gangasagar Mela) সবচেয়ে বড় মেলা। আগে সকলে বলতেন, সব সাগর বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। কিন্তু এখন তাঁরা বলেন, সব সাগর একবার, গঙ্গাসাগর বারবার। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই সাগরের উন্নয়ন হয়েছে। তাই মানুষ এখন আরও বেশি করে আসছেন। কিন্তু তার পরেও গঙ্গাসাগরে পৌঁছনো বেশ কঠিন। কারণ দেশের অন্যান্য প্রান্তের ধর্মীয় ও ঐতিহ্যপূর্ণ মেলাগুলিতে পৌঁছনোর জন্য সড়কপথ, রেলপথ রয়েছে। কিন্তু গঙ্গাসাগরে যাওয়ার উপায় শুধুমাত্র জলপথ। ভেসেল বা নৌকায় চড়েই গঙ্গাসাগর যেতে হয়। ফলে যাত্রাপথ বেশ কঠিন। তার পরেও প্রতি বছর ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ মানুষ মেলায় আসেন। তার পরেও কেন গঙ্গাসাগরের মেলাকে কেন্দ্র স্বীকৃতি দিল না জানি না। কুম্ভমেলার মতো একাধিক মেলা কেন্দ্রের সাহায্য পায়। প্রচুর টাকা দেয় কেন্দ্র। কিন্তু এই মেলার জন্য় সব খরচ করে রাজ্য সরকার ও সাধারণ মানুষ। আর কিছু ধর্মীয় সংগঠন দান করেন। কেন্দ্রের তরফে কোনও সহযোগিতা মেলে না।’ এদিনও তিনি গঙ্গাসাগর মেলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘কুম্ভমেলার সময় টাকা দেয়। আর গঙ্গা সাগরের সময় কচুকলা?’