নিজস্ব প্রতিনিধি: একজন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। অপরজন বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী। দুইজনের বাড়িতেই হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের রেশনবন্টন দুর্নীতি(Ration Distribution Corruption) ও পুরনিয়োগ দুর্নীতি(Municipal Recruitment Scam) ঘটনার শিকড় খুঁজে বের করা। সেই তদন্তেই এদিন ভোরে গ্রেফতার হয়েছেন প্রথমজন, রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriya Mallik) ওরফে বালু। তবে অপরজন তথা রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ(Rathin Ghosh) বহাল তবিয়তেই আছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল পুজোর আগে। তবে সেই ঘটনার জল গ্রেফতারি বা আটকের পথে গড়ায়নি। এদিন জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হতেই মুখ খুলেছেন রথীন। তবে তাঁর গলায় ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব।
কী বলেছেন রথীন বালুর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে? রথীনবাবুর দাবি, কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের পেছনে কেন্দ্রীয় শাসক দলের হাত রয়েছে। কার্যত তাঁদের অঙ্গুলি হেলনেই তদন্ত চলছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার যা বলার বলে দিয়েছেন। এরপর তিনি বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে চান না। তবুও তাঁর দাবি, ’২৪-র ভোটের(2024 General Election) আগে এইরকম অনেক কিছুই হবে। আরও কিছু অঘটন হবে।’ রাজ্যে রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তের ঘটনাতেই জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হয়েছেন। তাই সাংবাদিকদের রথীনের কাছে প্রশ্ন ছিল রেশন দফতরের মাধ্যমে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বণ্টনের ক্ষেত্রে কি দুর্নীতি হতো? রথীন ঘোষের জবাব, ‘আমি আসার পর রেশন সামগ্রী বন্টন এখন বায়োমেট্রিক সিস্টেমে হয়। বেশ কিছু অভিযোগ শুনেছি, তবে সেগুলো সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল না বলে কিছু বলা যায় না। রাজ্যে প্রায় ২ কোটির উপর রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে সম্প্রতি। সেই ভুয়ো কার্ডের বিষয়টি নিয়ে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়েছি। আধার কার্ড যাচাইয়ের বেশ কিছু কার্ড বাতিল করা হয়েছে। যেসব ভুয়ো কার্ড ছিল, সেগুলি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এটা কেন্দ্রীয় নীতিও ছিল।’
রথীনবাবুকে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং পুরসভা দুর্নীতি বাইরে খাদ্য দফতরে নিয়োগের ক্ষেত্রেও কী কোনও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন করা হয়। তার উত্তরে রথীন জানান, ‘খাদ্য দফতরে বা রেশন বিভাগে এরকম ভাবে নিয়োগ করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ পিএসসির মাধ্যমে হয়ে থাকে। সুতরাং এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ তোলা হলে সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এখন অনেক তদন্তই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে চালানো হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। শীর্ষ আদালত বলে দিয়েছে কোনও প্রমাণ ছাড়া গ্রেফতারি নয়। তারপরেও তো গ্রেফতারির ঘটনা ঘটছে।’