নিজস্ব প্রতিনিধি: ২৪’র ভোটের(General Election 2024) লক্ষ্যে দেশে তৈরি হয়েছে INDIA জোট। সেখানে কংগ্রেস(INC) সহ ২৮টি দল রয়েছে। জোটের ২৭টি দলের সঙ্গে আসন বন্টনের প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু করা যায় এবং যত দ্রুত সম্ভব দলের প্রার্থীদের বাছাই করা হয়ে যায়, সেই লক্ষ্যে ৫টি স্ক্রিনিং কমিটি(Screening Committee) গঠন করেছেন কংগ্রেস। শুক্রবার রাতে সেই স্ক্রিনিং কমিটি গঠনের বিষয়টি জানিয়েছে কংগ্রেস। যে যে স্ক্রিনিং কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ৫ নম্বর কমিটিটি গড়া হয়েছে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য। সেই কমিটিতে বাংলা(Bengal) ছাড়াও আছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি। এই ৫ নম্বর কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন রানা কে পি সিং। এছাড়াও কমিটিতে থাকছেন জয়বর্ধন সিং ও ইভান ডি সুজা। এই ৩জনই বাংলায় তৃণমূলের(TMC) সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি দেখবেন। যদিও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা দক্ষিণ ও বহরমপুর ভিন্ন আর কোনও আসনই কংগ্রেসকে ছাড়ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কংগ্রেস বেশি আসন নিয়ে জোরাজুরি করলে তৃণমূল একক ভাবেই বাংলায় ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রেই একা লড়াই করবে। তবে সেটা INDIA জোটে থেকেই।
ঘটনা হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা কেউ ৯টি, কেউ ৭টি কেউ বা ১২টি আসন দাবি করছেন বাংলা থেকে লড়াই করার জন্য। তাঁদের এই সংখ্যক আসন না দিলে জোটের কোনও মানে হয় না। যদিও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাঁদের জোট নিয়ে নমনীয় হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাতে অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সুরে বদল ঘটেনি। তাঁরা এখনও তৃণমূল অপেক্ষা বামদের সঙ্গেই জোট গঠনের জন্য প্রকাশ্যেই সাওয়াল করে চলেছেন। এই সুর বদল ঘটানো যে সম্ভব নয় সেটা বুঝেই এবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বও বাংলার প্রদেশ কমিটিকে বার্তা দিয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট না হলে তবেই বামেদের সঙ্গে জোটের প্রশ্ন থাকবে। আর সেই জোট তখনই হবে যখন বামেরা ISF’র হাত ছাড়বে। অন্যথা বাংলায় কংগ্রেস একাই লড়বে। শুধু তাই নয়, প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা কে কী দাবি করলেন বা বললেন সেটা যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে মাথা ব্যাথার ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে না, সেটা বুঝিয়ে দিতে বাংলার জেলায় জেলায় সমীক্ষা করাচ্ছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
কেন সমীক্ষা? কারণ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, উত্তরবঙ্গে নাকি তৃণমূলের থেকেও বেশ ভাল অবস্থায় রয়েছে কংগ্রেস। সেখানে নাকি বেশ কয়েকটি জেলায় তৃণমূলের নাকি কোনও অস্তিত্বই নেই। আবার দক্ষিণবঙ্গে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, আসানসোল, বীরভূম, বসিরহাট, কৃষ্ণনগরের মতো লোকসভা কেন্দ্রেও নাকি কংগ্রেস জেতার মতো অবস্থায় আছে। আবার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার ৩টি লোকসভা কেন্দ্র ও মালদা জেলার ২টি লোকসভা ক্লেন্দ্রেও কংগ্রেস নাকি জেতার মতো অবস্থায় আছে। জয় আসতে পারে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং দার্জিলিং জেলার একমাত্র লোকসভা কেন্দ্র দার্জিলিং আসনটিতেও। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের এই সব দাবিকে মুখের ওপর নাকচ না করিয়ে দিয়ে বাংলার লোকসভা কেন্দ্র ভিত্তিক কংগ্রেসের জনসমর্থন এবং ভোট কত আছে সেটা খতিয়ে দেখতে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ভোট কুশলী সংস্থাকে সমীক্ষা করার দায়িত্ব দিয়েছে। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট দেখেই বাংলা নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। তা সেই সিদ্ধান্ত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের পছন্দ হোক বা না হোক।