নিজস্ব প্রতিনিধি: পদ্মশিবিরের কথায় নাচতে গিয়ে, বাংলার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে গিয়ে শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালতে বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গিয়েছেন কলকাতার রাজভবনের(Raj Bhawan Kolkata) বাসিন্দা এ রাজ্যের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(Governor CV Anand Bose)। সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বোস আগামী দিনে আর একতরফা ভাবে রাজ্যের কোনও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, শীর্ষ আদালত(Supreme Court) এটাও জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাঁরা নিতে পারবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও। কার্যত রাজ্যপাল অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হেরে গিয়েছেন। সেই খবর আসতেই এদিন রাজভবনের গেটের সামনে তৃণমূলের(TMC) ধর্না মঞ্চে তুমুল উচ্ছ্বাস চোখে পড়ে। সবাই গান ধরেন একযোগে, ‘বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও’। তারই মধ্যে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়(Sudip Banerjee) ঘোষণা করেন, ‘মাত্র ২৪ ঘন্টা হচ্ছে অবস্থান ধর্না কর্মসূচির। এখনও সময় আছে রাজ্যপাল আলোচনায় বসুন, নইলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’
বস্তুত রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ঘটনায় রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিবাদের মধ্যেই একাধিকবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে, নবান্ন থেকে রাজ্যপালকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল সমস্যার সমাধানে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। কিন্তু সে কথা কানেই তোলেননি সি ভি আনন্দ বোস। তিনি একগুঁয়ে মনোভাব নিয়ে রাজ্য সরকারের নিয়োগ করা অস্থায়ী উপাচার্যদের সরিয়ে দিয়ে একতরফা ভাবে নিজ পছন্দমতন বা পদ্মশিবিরের নির্দেশ মতো অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করে গিয়েছেন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে তিনি UGC’র গাইডলাইনও মানেননি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি গেরুয়া শিবিরের লোকদেরই উপাচার্য পদে নিয়োগ করে দিয়েছেন। এইসবই এদিন ধাক্কা খেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যপালের এই গেরুয়া শিবির তোষণের ঘটনায় এদিন তাঁকে তীব্র কটাক্ষ হেনেছেন তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়েছেন, ‘আগে ভাবতাম রাজ্যপাল বিজেপির দালাল। তার পর মনে হত নরেন্দ্র মোদীর দালাল। তার পর এক দিন ভাবলাম, নিশ্চয়ই ইনি অমিত শাহের দালাল। এখন দেখছি ও সব কিছু না। এ আসলে শুভেন্দু অধিকারীর দালাল! আরে দালালদেরও তো একটা গ্রেড থাকে! এ হল শুভেন্দুর দালালি করার গ্রেডের।’