নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চরম আকার নিয়েছে। উপাচার্য বিল সংক্রান্ত মামলায় সেই সংঘাত আরও তীব্র আকার নিয়েছে। হাইকোর্টের তরফে রাজ্যপালের কাছে হলফনামা চাওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যপালের পাশে দাঁড়ালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ।
বুধবার এই প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, “হাইকোর্টের সেই অধিকার নেই বলেই আমার ব্যক্তিগত অভিমত। এটা না করলেই ভাল হত। সংবিধানেই এর সমাধান আছে। তবে মাননীয় বিচারপতি নিশ্চয় জানেন। আমি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কোনও বিল বিধানসভায় পাস হওয়ার পর তা রাজ্যপালের কাছে পাঠালে তিনি বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতেই পারেন। তিনি মনে করলে রাষ্ট্রপতির কাছেও পাঠাতে পারেন। তাঁকে যে সই করতেই হবে, এমন কোনও কথা সংবিধানে বলা হয়নি।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুন মাসে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিল পাশ হয় বিধানসভায়। ১৫ জুন তা পৌঁছয় রাজ্যপালের কাছে। ১ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে উপাচার্য নিয়োগ বিলে স্বাক্ষর করেননি রাজ্যপাল। মামলাকারীর দাবি ছিল, রাজ্যপালের কাছে কোন বিল পৌঁছলে তিনি সম্মতি জানিয়ে বিলে সই করতে পারেন। অথবা কোন সংশোধনের প্রয়োজন থাকলে রাজ্যপাল পরামর্শ দিতে পারেন বা পরামর্শ ছাড়াই বিল পাঠাতে পারেন। অথবা বিলটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন। এগুলির কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। এমনিতেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। ফলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে।
এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট কেন্দ্রের আইনজীবীকে বলেন,যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ কি করা যায় না? উত্তরে কেন্দ্রের আইনজীবী মামলাকারীর রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখার আবেদন করেন। সংবিধান রাজ্যপালকে রক্ষাকবচ দিয়েছে, তিনি জবাবদিহি করতে বাধ্য নন।
অপরদিকে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলে কি কোর্ট রাজ্যপালকে সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করতে পারে না?” কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপালকে আদালতের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা যায় না। শেষে ৪ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যপালের দফতরকে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ অক্টোবর।