নিজস্ব প্রতিনিধি: বছর আড়াই আগে বাংলার(Bengal) বুকে রাজ্য বিধানভার(West Bengal State Assembly) অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়ে বাজেট পেশ করার সময় বেশ কিছু উড়ালপুল নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তার মধ্যে ছিল চিংড়িঘাটা থেকে নিউটাউন ও উল্টোডাঙা থেকে পোস্তা উড়ালপুল(Flyover) দুটি। কিন্তু এখনও সেই দুটি উড়ালপুল নির্মাণের কাজই শুরু হয়নি। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে কার্যত অর্থের অভাবে এই দুটি উড়ালপুল নির্মাণের পথে এগোতে পারছে না রাজ্য সরকার। এই দুটি উড়ালপুল নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে এডিবি বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু দুটি জায়গা থেকেই সেভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। তার জেরেই কার্যত বিশবাঁও জলে চলে গিয়েছে এই দুটি উড়ালপুল নির্মাণের বিষয়টি।
আরও পড়ুন মোরবিকাণ্ডে গোখেলের গ্রেফতারি, টুইট ক্ষুব্ধ ব্রায়েনের
গিরিশ পার্ক থেকে পোস্তা হয়ে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত বিবেকানন্দ উড়ালপুল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। নানা জটিলতায় সেই কাজ বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। বেশ কয়েকবছর কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল এই নির্মীয়মাণ উড়ালপুল। সেই অবস্থায় ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। রবীন্দ্র সরণি এবং কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট সংলগ্ন উড়ালপুলের ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ে। ২১ জন মারা যান। অনেকে জখম হন। তখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে নির্মীয়মাণ উড়ালপুল পুরোটাই ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। কয়েক মাস আগে ওই উড়ালপুল ভাঙার কাজ শেষ হয়েছে। তার আগেই অবশ্য ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী পোস্তা থেকে উল্টোডাঙা উড়ালপুল নতুন করে তৈরি করার কথা বাজেটে ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে চিংড়িঘাটার উড়াল্পুল ভেঙে সেখান থেকে নিউটাউন অবধি একটি উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার আগেই করেছিল। সেই মতন বাজেটে ওই উড়ালপুল নির্মাণের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন আজমের শরীফে মুখ্যমন্ত্রী, রব উঠল ‘দিদি খেলা হবে’
এই দুটি উড়াল্পুল নির্মণাএর জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংস্থা ‘রাইটস’-কে দিয়ে একটি সমীক্ষাও করায়। সেই সমীক্ষা শেষে দুটি উড়াল নির্মাণের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা খরচ পড়বে বলে রিপোর্ট জমা পড়ে কেএমডিএ’র কাছে। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে সেই দুটি প্রকল্প নিয়ে আর একচুলও এগোতে পারেনি রাজ্য সরকার। কেননা ওই দুটি উড়ালপুল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে আসবে তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। কেএমডিএ’র তরফে এরপর এডিবি ও বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে দুটি উড়ালপুল নির্মাণের জন্য ঋণের আবেদন জানানো হলেও তা নিয়ে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি ওই দুই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে আর তার জেরেই এখন নবান্নের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন কার্যত দুটি উড়ালপুল নির্মাণের বিষয়ই এখন বিশবাঁও জলে চলে গিয়েছে।