নিজস্ব প্রতিনিধি: আশঙ্কার কথাই শোনালেন রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিসকেরা। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া কৌতুহল মেটালেন। চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, অভিজিৎ চৌধুরী, কুণাল সরকার যা জানালেন সেটা যথেষ্টই ভীতিপ্রদ। তাঁদের বক্তব্য, সবাই প্রশ্ন করছে দেশে তৃতীয় ঢেউ এসেছে কিনা বা আসবে কিনা? বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছি আমরা? এনিয়ে স্পষ্ট বলে দেওয়া যায়, আমার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে রয়েছি। এনিয়ে কোনও দ্বিধা নেই। ডাঃ দীপ্তেন্দ্র সরকার এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫০ থেকে ৩৫০০০ হতে মাত্র ১০ দিন লেগেছিল। অর্থাৎ ওই দশদিনে সংক্রমণ বেড়েছে ১,০০০ শতাংশ।
একইভাবে ব্রিটেন বা আমেরিকাতেও নতুন করে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকশো গুণ বেড়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের কথা বিচার করলে যদি গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ধরা যায়, তাহলে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে বিশাল সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি, সংক্রমণের এই হার বজায় থাকলে বিশাল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। এর কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তাঁরা বলেন, আসলে করোনার টিকার ইমিউনিটি অনেকটাই কমে এসেছে। তাই অনেকেই আবার দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে চিকিৎসকমহল, যা একেবারে প্রথমদিকে করোনার টিকা নিয়েছিলেন। এবার তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই ৬০-৭০ জন চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি, করোনার টিকার ইমিউনিটি অনেকটাই কমে এসেছে। তাই যখন একটা সংক্রমণের ঢেউ আসছে, তখনই কাতারে কাতারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ১২-১৩ মাস হয়ে যাওয়ার পর ভ্যাকসিনের ইমিউনিটি অনেকটাই চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেই পুরোনো দাওয়াই দিচ্ছেন। তাঁদের মতে এই মুহুর্তে করোনা ঠেকানোর একমাত্র হাতিয়ার হল মাস্ক। প্রথম ঢেউয়ের মতোই এবার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। তাই মাস্কই পারে আমাদের করোনা থেকে দূরে রাখতে। আর যদি ভাবেন, করোনার দুটি টিকার ডোজ বা একবার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাই আর আক্রান্ত হবেন না। সেটা বড় ভুল হবে বলেই সাবধান করে দিলেন বিশেষজ্ঞরা।