নিজস্ব প্রতিনিধি: রাস্তায় বেরিয়ে বাইক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সী মুহাম্মদ ফিতরি। ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় পড়ে ছিলেন বেহুঁশ অবস্থায়। আশেপাশের অনেক পথচারীর বিষয়টি নজরে পড়লেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি কেউই। কোনও জীবিত মানুষের কাছ থেকে যখন কোনও সাহায্য মেলেনি, তখন ওই আহত ব্যক্তির হাতের ঘড়ির মতো জড়বস্তুই রক্ষা করেছে তাঁর প্রাণ। ফিতরি যখন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তখন তাঁর হাতে ছিল একটি অ্যাপেল ওয়াচ। আর সেই অ্যাপেল ওয়াচই শেষ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচিয়েছে তাঁর। আহত ফিতরিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর ঘড়িই মেডিকেল ইমার্জেন্সি নম্বরে বার্তা পাঠায় এবং সেই বার্তা পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার করে ফিতরিকে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুরের কোনও এক রাস্তায় মুহাম্মদ ফিতরির বাইকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় একটি মালবাহী ভ্যানের। তৎক্ষণাৎ রাস্তায় ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারান ফিতরি। ওই আহত ব্যক্তি জানান, রাস্তায় বহুক্ষণ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেও কেউ তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। এমনকি তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ারও চেষ্টা করেননি কেউ। এমতাবস্থায় তাঁর হাতে থাকা অ্যাপেল ওয়াচ সিরিজ ৪ মডেলের ঘড়িটি মেডিকেল এমার্জেন্সি নম্বরে জরুরি বার্তা পাঠায় এবং সেই বার্তা পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় অ্যাম্বুলেন্স এবং উদ্ধার করে ফিতরিকে।
কিন্তু কি এমন বিশেষত্ব এই ঘড়ির যা দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষকেও চিহ্নিত করতে পারছে? বিশেষজ্ঞরা জানালেন, ওই ঘড়ির বিশেষত্ব হল ‘ফল ডিটেকশন ফিচার’। ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরে ওই ব্যক্তি যখন রাস্তায় ছিটকে পড়েছিলেন তখনই তাঁর ঘড়িটি বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গে বার্তা পাঠায় মেডিকেল ইমার্জেন্সি নম্বরে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই মৃত্যুপথযাত্রী একাধিক মানুষকে সাহায্য করে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অ্যাপেল ওয়াচ। সম্প্রতি আরও একটি ঘটনা সামনে আসে যেখানে এই অ্যাপেল ওয়াচ একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে বারবার হাসপাতালে যেতে নির্দেশ দিচ্ছিল। বিষয়টি কোনওভাবেই এড়াতে না পেরে তিনি যখন হাসপাতালে যান এবং বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করান তখন জানা যায় আর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওই ব্যক্তি ভয়াবহ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে যাচ্ছিলেন। ওই ব্যক্তির শরীরে রক্ত চলাচলে আকস্মিক পরিবর্তন দেখেই বিষয়টি বুঝতে পারে তাঁর হাতের ঘড়ি এবং তৎক্ষণাৎ তাঁকে হাসপাতালে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। হাতের ঘড়ির দৌলতেই সেই যাত্রায় বেঁচে যান ওই ব্যক্তি।