নিজস্ব প্রতিনিধি, ভোপাল: বিজেপি জমানায় মুসলিম হওয়া যে কত বড় অপরাধ তা আরও একবার প্রমাণিত হলো। শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার অপরাধে মাইহারে সারদা টেম্পলে কর্মরত দুই কর্মীকে চাকরি হারা হতে হচ্ছে। ১৯৮৮ সাল থেকেই মন্দিরে কর্মরত ছিলেন দুজনে। আর ওই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দিকপাল বাবা আলাউদ্দিন খাঁ জন্মেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মাইহারে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে মাইহার ঘরানার সূচনা তাঁর হাত ধরে। এক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছিল মাইহার। সেখানকার সারদা মন্দিরে হিন্দুদের পাশাপাশি কাজ করতেন মুসলিমরাও। এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দেশে হিন্দুত্ববাদীদের রমরমা শুরু হতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম নিদর্শন মাইহারের বাতাসে ধর্মের বিষবাষ্প ছেয়ে গিয়েছে।
হিন্দুদের সারদা মন্দিরে কেন বিধর্মী মুসলিমরা কাজ করবেন তা নিয়ে হইচই শুরু করে দিয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। গত জানুয়ারি মাসেই রাজ্যের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় স্থাপনা মন্ত্রী ঊষা চৌধুরীর কাছে হিন্দু মন্দিরে মুসলিম কর্মীদের চাকরি নিয়ে নালিশ ঠুকেছিলেন। সেই নালিশের জেরে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় স্থাপনা বিষয়ক দফতরের উপসচিব পুষ্প কৈলাস সারদা মন্দিরের অছি পরিষদের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অনুরাগ ভার্মাকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে সারদা মন্দিরে কর্মরত দুই মুসলিম কর্মীকে ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩৫ বছর ধরে যে দুই কর্মীর কাজের ফলে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত লাগেনি, হঠাৎ এমনকী হলো যে ওই দুই কর্মীকে তাড়াতে হচ্ছে, তা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি মধ্যপ্রদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী।