নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: বাগেরহাটের এক মহিলা শিল্পোদ্যগীকে খুন করে ১৭ বছর ধরে ছদ্মবেশ ধরে লুকিয়ে ছিল হেমায়েত ওরফে জাহিদ কবিরাজ নামে এক খুনি। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মাঝে মাঝে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতেও চলে যেত। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রোগী সেজে বুধবার গভীর রাতে ঢাকার বছিলা থেকে খুনি কবিরাজকে গ্রেফতার করেছেন র্যাবের গোয়েন্দারা।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি পেশা শুরু করেন হেমায়েত। কবিরাজির পেশার আড়ালে কার্যত মহিলাদের টার্গেট করে টাকা লুঠতেন। ২০০৩ সালে তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটে এসে ঘাঁটি গাড়েন। ২০০৫ সালের চিকিৎসার জন্য হেমায়েতের দ্বারস্থ হন বাগেরহাটের মহিলা শিল্পপতি মনোয়ারা মনু। এক পর্যায়ে মনুকে তার যাবতীয় সম্পত্তি এবং টাকা-পয়সায় জিনের আসর পড়তে পারে বলে ভয় দেখিয়ে সবকিছু হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন হেমায়েত। মনুও সরল বিশ্বাসে তার টাকা-পয়সা ও সম্পত্তির দলিল হেমায়েতের কাছে জমা রাখেন। একদিন অজ্ঞানের ওষুধ খাইয়ে দলিলে টিপসই নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মনুকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার পর গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যশোরের একটি মাজারে গিয়ে আশ্রয় নেন হেমায়েত। পরদিন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অজমেঢ়ে আশ্রয় নেন। ২০০৮ সালে দেশে ফিরে এসে ঢাকার মিরপুরে বসবাস শুরু করেন।
দেশে ফেরার পরে পরিচয় গোপন করে লম্বা চুল ও দাড়িসহ ছবি ব্যবহার করে জাহিদুল ইসলাম ছদ্মনামে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন হেমায়েত। মিরপুরে থাকাকালীন কবিরাজির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেন হেমায়েত। ভাগ্য পরিবর্তনে তাবিজ, স্বামী-স্ত্রীর কলহ দূরীকরণ, বশীকরণসহ নানা কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতাতে শুরু করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তে নামা হয়। প্রতারণার তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করে বুধবার গভীর রাতে রোগী সেজে হেমায়েতকে পাকড়াও করেন র্যাবের গোয়েন্দারা।