নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ১৭ বছর আগে স্ত্রীকে নৃশংস খুনের দায়ে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। ফাঁসির দড়ি থেকে নিজেকে বাঁচাতে এবং পুলিশের চোখে ধুলো দিতে রাতারাতি সাংবাদিক হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা আশরাফ হোসেন কামাল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বৃহস্পতিবার সাভারের আশুলিয়া থেকে ওই সাংবাদিক ছদ্মবেশধারী ফাঁসির আসামিকে পাকড়াও করেছে র্যাব।
শুক্রবার দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, ‘নোয়াখালীর বাসিন্দা আশরাফ ১৯৯৮ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতেকোত্তর করে ২০০১ সালে সোনারগাঁওয়ে একটি সিমেন্ট কারখানায় কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৩ সালে সানজিদা আক্তারের সঙ্গে বিয়ের পর ওই সিমেন্ট কোম্পানির আবাসিক এলাকাতেই বসবাস করতে থাকেন। তাদের একটি ছেলেও হয়। ২০০৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ওই আবাসিক এলাকা থেকে সানজিদার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ আশরাফকে গ্রেফতার করলেও শিশু সন্তানের কথা ভেবে ১২ দিন পর সানজিদার বাবা সাদেক মিয়া জামাইয়ের জামিনের ব্যবস্থা করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরেরদিনই আশরাফ এলাকা ছাড়েন। ২০০৫ সালের এপ্রিলে সানজিদার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শ্বাসরোধ করেই সানজিদাকে খুন করা হয়েছে। সোনারগাঁ থানার পুলিশ আত্মহত্যার মামলা দায়ের করে। ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত স্ত্রীকে খুনের দায়ে আশরাফকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়।’
র্যাব মুখপাত্রের কথায়, ‘সোনারগাঁ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে আশুলিয়ায় ঘাঁটি গাড়ে আশরাফ। সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়। ২০০৬ সালে আশুলিয়ায় ‘সাপ্তাহিক মহানগর বার্তা’ পত্রিকার সহসম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করে। ২০০৯ সালে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সদস্য হয়। ২০১৩-১৪ সালে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ২০২০ সালে দৈনিক ‘সময়ের বাংলা’ নামের এক পত্রিকায় প্রতিবেদক হিসেবে যুক্ত হয়। মূলত বিভিন্ন ভূইফোঁড় সংবাদপত্র ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিল আশরাফ। তার কাছ থেকে একাধিক সংবাদপত্রের সচিত্র পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। এমনকী জাতীয় পরিচয়পত্রও জোগাড় করেছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাহায্যে আশরাফকে শনাক্ত করা হয়।’