নিজস্ব প্রতিনিধি: রবিবার (২৮ এপ্রিল) মহাদেব বেটিং অ্যাপ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অভিনেতা সাহিল খান। কয়েক মাস ধরেই মহাদেব বেটিং অ্যাপ মামলায় ইডির নজরে রয়েছেন একাধিক বলিউড সেলিব্রিটি। যাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে সমনও পাঠিয়েছে ইডি। মহাদেব বেটিং অ্যাপ সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১৫,০০০ কোটি আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। গতকাল এই মামলার প্রেক্ষিতেই ৪০ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে ছত্তিশগড় থেকে সাহিল খানকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকবার সমন পাঠালেও তিনি আদালতে হাজির হননি। উল্টে তিনি আগাম জামিনের জন্যে আদালতে আবেদন জানালে মুম্বই আদালত তা প্রত্যাখ্যান করে।
এরপরই তাঁকে ধরার জন্যে অভিযান শুরু করে মুম্বই পুলিশ। অবশেষে ৪০ ঘন্টা অভিযান চালানোর পর ছত্তিশগড় থেকে সাহিল খানকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, মহাদেব বেটিং অ্যাপ মামলায় গ্রেফতার এড়াতে চার দিনে পাঁচটি রাজ্য জুড়ে প্রায় ১,৮০০ কিমি সফর করেছেন সাহিল খান। তাঁর সফর শেষে শনিবার ছত্তিশগড়ের জগদলপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, গোয়ায় পিট স্টপের আগে অভিনেতা প্রথমে মহারাষ্ট্রে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি কর্ণাটকের হুব্বালিতে যান এবং তারপর হায়দরাবাদে যান। এমনকি নিজের পরিচয় এড়াতে সাহিল খান ছদ্মবেশ ধারণ করেন, নিরবচ্ছিন্ন পোশাকে ঘুরে বেড়ান। অবশেষে হায়দরাবাদে থাকাকালীন পুলিশ সাহিলের অবস্থান ট্র্যাক করে। আর পুলিশের ট্র্যাকিংয়ের কথা জানতে পেরেই অভিনেতা দ্রুত ছত্তিশগড়ে পালিয়ে যায়। এরপর ছত্তিশগড়ের একটি মাওবাদী এলাকায় তিনি আশ্রয় নেন। পুলিশের ধরা এড়াতে অনেক প্রচেষ্টা করলেও অবশেষে জগদলপুরের আরাধ্যা ইন্টারন্যাশনাল হোটেল থেকে গ্রেপ্তার হন সাহিল।
জানা যায়, মুম্বই পুলিশ সাহিলকে ধরার জন্যে প্রায় ৭২ ঘন্টা ধরে ট্র্যাক করছিল। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর, পুলিশ অভিনেতার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে। এখন মুম্বাইয়ের একটি আদালত সাহিলকে ১ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। অভিযোগ, সাহিল খান লায়ন বুক এবং লোটাস 24/7-এর মতো বেটিং প্ল্যাটফর্মের প্রচারের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সাহিল বরাবরই দাবি করেছেন যে, তিনি এই ধরনের অনৈতিক কাজকর্ম চালানোর প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত নন। সাহিল খান বলিউডের একজন পরিচিত অভিনেতা। তিনি ‘স্টাইল’ এবং ‘এক্সকিউজ মি’-এর মতো চলচ্চিত্রে তার ভূমিকার জন্য পরিচিত। তবে বলিউডে তেমন প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি সাহিল, এখন তিনি জিম ফ্রিক।
মহাদেব বেটিং অ্যাপ
ছত্তিশগড়ের সৌরভ চন্দ্রকার এবং দুবাই থেকে রবি উৎপল দ্বারা পরিচালিত, মহাদেব অনলাইন বেটিং অ্যাপটি আইপিএল ম্যাচ, ফুটবল, টেনিস এবং অন্যান্য বিভিন্ন খেলার ইভেন্টের ফলাফলের উপর বাজি ধরে ব্যবহারকারীদের প্রলুব্ধ করে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অর্থপ্রদানের ভুয়ো বিজ্ঞাপন তৈরি করে। অভিনেতা রণবীর কাপুর, শ্রদ্ধা কাপুর, এবং তামান্না ভাটিয়াকেও বেটিং অ্যাপ এবং এই অনুমোদিত প্ল্যাটফর্মের প্রচারে জড়িত থাকার জন্য তলব করা হয়েছিল। অ্যাপের গ্রাহকদের দুটি স্বতন্ত্র নম্বর বরাদ্দ করা হয়। একটি বেটিং তহবিল জমা করার জন্য এবং অন্যটি উইনিং টাকা তোলার জন্য। এই অ্যাকাউন্টগুলি প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা হত।