নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনার কামড়ে দিন যাচ্ছে ততই আর ভয়ানক হয়ে উঠছে চিনের পরিস্থিতি। একদিকে যেমন প্রতিদিনই কার্যত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার দৈনিক আক্রান্তের স্নগখ্যা, অন্যদিকে ঠিক তেমনই করোনা মোকাবিলায় প্রায় প্রতিদিনই আর কঠোর হচ্ছে চিনের বিভিন্ন শহরের লকডাউনের বিধিনিষেধ। আর তার জেরেই রীতিমতো অনাহারে ভুগছে সাংহাইসহ চিনের একাধিক শহরের বাসিন্দারা। বিষয়টা হল, করোনার সংক্রমণ রুখতে চিনের একাধিক শহরের মানুষের বাইরে বের হওয়া কার্যত নিষিদ্ধ। এর মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা সাংহাইয়ের। জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের বাড়ির সামনের ফাকা জায়গাতেও আসার অনুমতি নেই। প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশী স্ম্য ধরে চলছে এই লকডাউন। এর জেরে বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে খাদ্যাভাব। যদিও সরকারের তরফ থেকে প্রায় প্রতিদিনই ত্রাণ বিলির কাজ চলছে, কিন্তু সেতাও যথেষ্ট নয়। আর তাই শহর জুড়ে চলা এই কঠোর লকডাউনের প্রতিবাদে সমগ্র সাংহাইজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। কিন্তু এই মুহূর্তে ত মানুষের বাড়ির বাইরে পা রাখা পরজন্ত বারণ। তাই কোনও উপায়ান্তর না দেখে শহরের মানুস বাড়ির ভিতর থেকে জানালা দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সাংহাই শহরের একটি ভিডিও। ভিডিওটি বানিয়েছেন ওই শহরেরই এক বাসিন্দা। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন বহুতলের জানালা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রাণপণ চিৎকার করে এই কঠোর লকডাউনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তাঁদের দাবি, প্রায় ১ সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে তাঁরা সম্পূর্ণভাবে বাড়িতে আবদ্ধ। এমনকি খাবারের জিনিস কিংবা ওষুধপত্র পর্যন্ত কিনতে যাওয়ার অনুমতি নেই তাঁদের। এর জেরে হাজার হাজার মানুষ প্রায় অনাহারের মধ্যে দিন কাটাতে শুরু করেছে। এদিকে প্রায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে লকডাউন তুলে নেওয়ারও এই মুহূর্তে কোনও সম্ভাবনা নেই। এর জেরে ব্যাপক সংকটের মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। সম্প্রতি এই লকডাউনের প্রতিবাদে সাংহাইবাসীকে তাঁদের বাড়ির ব্যালকনি থেকে ‘কন্ট্রোল ইওর সল’স ডিজায়ার ফর ফ্রিডম’ গানটি সমস্বরে গাইতেও শোনা গিয়েছে।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে খাবার ও ওষুধের দাবিতে কিছু মানুষকে পিপিই কিত পরেই হাসপাতাল কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। তাঁদের হাতে রয়েছে মাইক, যার সাহায্যে তাঁরা সরকার এবং সরকারি এই করোনা বিধি নিষেধের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন এর জেরে আরও সংকটজনক হচ্ছে সাংহাইয়ের পরিস্থিতি এবং যে কোনও দিন মানুষ সরকারি নিয়ম ভেঙে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করতে পারে। এর জেরে একদিকে যেমন বিপদে পড়বে সরকার। ঠিক তেমনই এই বিক্ষোভ, মিছিলের জেরে আরও দ্রুত ছড়াতে শুরু করবে করোনার সংক্রমণ।