নিজস্ব প্রতিনিধি : স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর জীবদ্দশায় নারীশিক্ষার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, সমাজকে শিক্ষিত করে তুলতে গেলে নারীদের শিক্ষিত করে তোলা খুব প্রয়োজন। স্বামীজির এই আদর্শ শুধু শিক্ষিত মহিলাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল, তাই নয়, সেই সঙ্গে মহিলা বিপ্লবীদেরও স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছিল।
স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নাম কে না জানে। জানা যায়, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল স্বামীজির লেখা কর্মযোগ, ভক্তিযোগ বীরবানী ও পত্রাবলী। প্রীতিলতার সঙ্গে সবসময় ঠাকুর রামকৃষ্ণের ছবি থাকত। স্বামীজির প্রতি প্রীতিলতার যে গভীর শ্রদ্ধা ছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের লেখা একটি চিঠি থেকে। ১৯৩৮ সালে প্রীতিলতাকে ওই বিপ্লবী চিঠিতে লিখছেন, ‘মনে হচ্ছে, একদিন তোমার ব্লাউজে স্বামীজির একখানা মনোগ্রাম আঁটা দেখলাম। আমার ওটা খুব ভালো লেগেছিল। যুগগুরুর প্রতি অকপট শ্রদ্ধা এমনি করে চিরদিন তোমার অন্তর আলো করে রাখবে কি? ওকে তোমার খুব ভালো লাগে, আমারও তাই।‘ চিঠির ওই কয়েকটি লাইন থেকেই স্পষ্ট, স্বামীজি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন।
শুধু প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারই নয়, আরেক মহিলা বিপ্লবী কল্পনা দত্তও ছিলেন স্বামীজির ভক্ত। কলকাতায় বেথুন কলেজের বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন কল্পনা। কল্পনার জীবনে স্বামীজির আদর্শ গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত কল্পনা ছিলেন স্বামীজির মন্ত্রে দীক্ষিত। পাশাপাশি আরেক বিপ্লবী মাতঙ্গিনী হাজরাও ছিলেন স্বামীজির আদর্শে দীক্ষিত। তমলুকের রামকৃষ্ণ মিশনের সাধুদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল মাতঙ্গিনী হাজরার। জানা যায়, ইস্টমন্ত্র জপ না করে জলগ্রহণ করতেন না এই মহিলা বিপ্লবী। স্বামীজির আদর্শে উদ্বু্দ্ধ হয়েই ১৯৩২ সালে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা।