নিজস্ব প্রতিনিধি: ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের পরবর্তী ৬ দিনে ১০ গুণ বৃদ্ধি পেল রাজ্যেের করোনা সংক্রমণ। যা দেখে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসক মহল ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে বর্ষবরণের আনন্দে রাশ টানার আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বর্ষবরণের প্রাক্কালে এবং নতুন বছরের প্রথম দিন রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এবং কলকাতার সমস্ত দর্শনীয় স্থান, বিনোদন পার্কে উপচে পড়ল ভিড়। বেশিরভাগেরই মুখে নেই মাস্ক, শিকেয় উঠল দুরত্ববিধি। তবে বিশেষজ্ঞদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের বেশিরভাগ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রেখেছিল নতুন বছরের প্রথম দিন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে আটকে রাখা গেল না। শনিবার নতুন বছরের প্রথমদিনই দেখা গেল বন্ধ মন্দিরের গেটেই হাজির ভিড়। সেখান থেকেই মাথা ঠুকলেন অনেকে। এরপরই ভিড় পৌছে গেল শহরের আনাচে কানাচে।
১ জানুয়ারি করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বন্ধ রাখা হয়েছিল কালীঘাট মন্দির, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বেলুড় মঠ, কাশীপুর উদ্যানবাটি। তবে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুরে কল্পতরু উৎসব পালিত হল এদিন। তবে করোনা আবহে বসে বা সাষ্টাঙ্গে প্রণাম নয়, শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে প্রণাম করা গেল ঠাকুরকে। আবার খোলা ছিল তারাপীঠ মন্দির। তাই বছরে প্রথম দিনে, শনিবার সকাল থেকেই তারাপীঠে উপচে পড়া ভক্তদের ভিড়। মানা হল না কোনও সামাজিক দূরত্ব। অভিযোগ, কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। অপরদিকে কাশীপুর উদ্যানবাটি বা দক্ষিণেশ্বরে কল্পতরু উৎসবে সাধারণ মানুষ সামিল হতে না পারলেও ভিড় ছিল মন্দিরের বাইরে। অনেকেই চলে আসেন পরিবার নিয়ে। সেখানেও দেখা গেল মাস্কহীনদের দাপট। একই চিত্র কালীঘাট মন্দিরেও।
অপরদিকে কলকাতার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান যেমন চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ময়দান, প্রিন্সেপ ঘাট, মিলেনিয়াম পার্ক, সায়েন্স সিটি, নিকো পার্ক, ইকো পার্কের মতো জায়গায় শনিবার তিল ধরানোর জায়গা ছিল না। আর এই ভিড়ে দেখা গেল দুরত্ববিধি শিকেয় তুলে থিকথিকে ভিড়। অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। কেন নেই? কেউ বললেন সাধের মেকআপ উঠে যাবে তো কেউ বললেন ছবি তোলার জন্য মাস্ক খুলেছেন। তবে তা ছিল শুধুমাত্র বাহানা সেটা গণহারে মাস্কহীন মানুষদের দেখেই বোঝা যায়। ২৫ ডিসেম্বরের লাগামছাড়া ভিড়ের ফল দেখা যাচ্ছে এখন। গত ছয় দিনে ১০ গুণ বেড়েছে সংক্রমণ। এবার ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারির ভিড়ের ধাক্কা করোনা সংক্রমণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই ভেবে কুল করতে পারছেন না চিকিৎসকরা।