নিজস্ব প্রতিনিধি, আমদাবাদ: স্বপ্নভঙ্গ ১৪০ কোটি ভারতবাসীর। ২০ বছর আগেরই পুনরাবৃত্তি ঘটল। ২০০৩ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত পারেনি। রবিবার রোহিত শর্মার ভারতও পারল না। কার্যত একতরফা খেলে টিম ইন্ডিয়াকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ষষ্ঠ বারের জন্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া। ৪২ বল বাকি থাকতে হাতে ছয় উইকেট নিয়ে জিতলেন প্যাট কামিংসরা। আর ওই জয়ের নায়ক অজি ওপেনার ট্র্যাভিস হেড আর মার্নুস লাবুশানে। দুজনের ১৯২ রানের জুটি রোহিত শর্মাদের চোখের জল বের করে দিয়েছে।
জয়ের জন্য ২৪১ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করেন দুই অজি ওপেনার ট্র্যাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। নিজের প্রথম বলেই ওয়ার্নারকে (৭) ফিরিয়ে অজি শিবিরে জোর ধাক্কা দেন মহম্মদ শামি। ওই এক আউটে মোতেরা স্টেডিয়ামের ম্রিয়মান দর্শকরা জেগে উঠলেন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেই থিতু হওয়ার চেয়ে চালিয়ে খেলতে গিয়ে যশপ্রীত বুমরার বলে সাজঘরে ফিরলেন মিচেল মার্শ (১৫)। চলতি বিশ্বকাপে চূড়ান্ত ব্যর্থ স্টিভ স্মিথ দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলার পরিবর্তে উল্টে বিপাকে ফেলে দিয়ে বুমরার বলে মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ৪৭ রানে তিন টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।
চতুর্থ উইকেটে জুটি বেঁধে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলেন ট্র্যাভিস হেড ও মার্নুস লাবুশানে। মারকুটে খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত হেড ৫৮ বলে অর্ধশতরান করেন। ১১৯ বলে ১০০ রান যোগ করে দলকে শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করান। ভারতীয় পেসার ও স্পিনারদের নিয়ে ছেলেখেলা করতে থাকেন দুই অজি ব্যাটার। আগের ১০ ম্যাচে যারা বিপক্ষের ব্যাটারদের কাছে ত্রাস হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সেই মহম্মদ শামি-মহম্মদ সিরাজদের সাধারণ মানের বোলারই মনে হয়েছে। যেভাবে খেলেছেন হেড-লাবুশানে তাতে দুজনকেই অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছে। ভারতীয় বোলারদের নির্দয়ভাবে পিটিয়ে ৯৫ রানে শতরান তুলে নেন হেড। খানিকবাদে অর্ধশতরান করেন লাবুশানেও। এক সময়ে মনে হচ্ছিল, দুই অজি ব্যাটারই দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে যখন দল তখনই মহম্মদ সিরাজের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে শুভমন গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হেড। আউট হওয়ার আগে ১১৯ বলে ১৩৭ রানের এক অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন অজি ওপেনার। হেডের ইনিংস সাজানো ছিল ১৫টি চার ও চারটি ছক্কায়। পাঁচ নম্বরে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সিরাজের বল বাউন্ডারি লাইনের কাছে পাঠিয়ে দলকে জয় এনে দেন। লাবুশানে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন।